ওভারটাইম হলো সাধারণ কর্মকান্ডার থেকে অতিরিক্ত কাজের সময়। যা শ্রম আইন অনুযায়ী নির্ধারিত নিয়মে গণনা করা এবং পরিশোধ করা হয়। সাধারণত প্রত্যেকদি ৮ ঘন্টা এবং সাপ্তাহিকভাবে ৪৮ ঘণ্টার বেশি সময় দিয়ে কাজ করলে সেটা অনুভারটাইম হিসেবে বিবেচিত হয়।
ওভার টাইমের আইনগত নিয়ম
বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এর ধারা ১০০ অনুযায়ী:
- দৈনিক স্বাভাবিক কর্ম ঘন্টা:৮ ঘন্টা।
- সাপ্তাহিক সর্বোচ্চ কর্ম ঘন্টা: ৪৮ ঘন্টা
- ওভার টাইম সহ সর্বোচ্চ কর্ম ঘন্টা: ৬০ ঘন্টা
- বার্ষিক গড় ওভারটাইম সীমা: ৫৬ ঘন্টা (প্রতি সপ্তাহ)
ওভারটাইম গণনা পদ্ধতি
যে কোন ওভার টাইমের মজুর নির্ধারণ করা হয় মূল বেতনের দ্বিগুণ হারে। নিচে সূত্রের মাধ্যমে ওভারটাইম গণনা পদ্ধতি দেখানো হলো:
ওভারটাইম নির্ণয়ের সূত্র:
মূল বেতন ÷ ২০৮ × ২ = প্রতি ঘণ্টার ওভার টাইম হার
উদাহরণ: ধরুন ১ কজন কর্মীর মূল বেতন ৬০০ টাকা।
তার ওভার টাইমের হার হবে:
৬০০ ÷ ২০৮ × ২ = ৫.৭৭টাকা (প্রতি ঘণ্টার ওভারটাইম)
আরো পড়ুন: মালয়েশিয়া ভিসা: খরচ, ধরন, কলিং ভিসা আপডেট ও প্রসেসিং এজেন্ট
গার্মেন্টস ওভারটাইম হার বের করার নিয়ম
গার্মেন্টস কর্মীদের ওভারটাইম হার বের করার সাধারণ নিম্নলিখিত ফর্মুলা অনুসরণ করুন:
ওভারটাইম হার (প্রতি ঘণ্টা) = (মাসিক বেতন ÷ ২৬ ÷ ৮) × ২
উদাহরণ:
ধরুন, একজন গার্মেন্টস কর্মীর মাসিক বেতন ১৫,০০০ টাকা তাহলে, (১৫,০০০ ÷ ২৬ ÷ ৮) × ২ = ১৪৪.২৩ টাকা (প্রতি ঘণ্টার ওভারটাইম হার)
এই নিয়মে সহজেই গার্মেন্টস কর্মীদের ওভারটাইম বের করতে পারবেন। বেতনের জায়গায় আপনার যে বেতন সেটা বসিয়ে দিয়ে পরবর্তী ভাগ গুলো সম্পন্ন করুন।
ওভার টাইম এর সুবিধা এবং অসুবিধা
সুবিধা:
- অতিরিক্ত ইনকাম করার সুযোগ পাওয়া যায়
- কোম্পানির উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করা যায়
- শ্রমিকদের দক্ষতা বৃদ্ধি করা যায়
- শ্রমিকদের বেতন এবং কাজের সুযোগ সৃষ্টি হয়
- অতিরিক্ত আগ্রহী শ্রমিকদের গুরুত্ব বাড়ে
অসুবিধা:
- অতিরিক্ত কাজের যুগের কারণে স্বাস্থ্য ঝুঁকি দেখা দিতে পারে
- পরিবার এবং ব্যক্তিগত জীবনে বা কাজে কর্মে প্রভাব ফেলে
- দীর্ঘক্ষণ কাজ করার ফলে কর্মীদের কাজের মনোবল নষ্ট হয়ে যায়
- অতিরিক্ত কাজ করার ফলে বয়স্কদের সমস্যা দেখা যায়
- কর্মীদের কাজের প্রতি অনীহা চলে আসে
রাত্রিকালীন ওভারটাইম করার নীতি
- রাত ১০ থেকে সকাল ছয়টা পর্যন্ত কাজ করলে ওভারটাইম হিসেবে বিবেচিত হয়
- নারীকর্মীর ক্ষেত্রে তার সম্মতি ছাড়া ওভারটাইম করতে বাধ্য করা যাবে না
- ওভারটাইম করা কর্মীদের ক্ষেত্রে ২৪ ঘন্টার মধ্যে বিশ্রাম নিশ্চিত করতে হবে।
এক্ষেত্রে সরকারি এবং আধা সরকারি বিভিন্ন কোম্পানিগুলোতে নিয়মের কিছু পরিবর্তন রয়েছে। সেক্ষেত্রে কোম্পানি তাদের নিয়ম এবং ডিপার্টমেন্ট এর মধ্যে এই বিষয়গুলো উল্লেখ করে দেয়।
ওভারটাইম সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বিষয়
- ওভারটাইম সম্পূর্ণ নিজের ইচ্ছায়
- কর্মী চাইলে যে কোন সময় ওভারটাইম করতে অস্বীকার করতে পারে
- ওভার টাইম করার জন্য একটি সম্মতিপত্রে স্বাক্ষর করতে হবে
- ওভারটাইম করা শ্রমিকদের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বেতন পরিশোধ নিশ্চিত করতে হবে