নিরিবিলি ভ্রমণের জন্য সব থেকে পারফেক্ট জায়গা হল থাইল্যান্ড। দৈনন্দিন কাজের চাপ থেকে কাজে উঠতে এবং মাথাটাকে ঠান্ডা রাখতে প্রয়োজন নিরিবিলি একটি ভ্রমণ। আপনি হয়তো দেশের ভেতরে অনেক ঘোরাঘুরি করেছেন কিন্তু সাবধান একটু বাহিরে বিদেশ গিয়ে ঘুরে আসতে তাহলে আপনার জন্য থাইল্যান্ড হবে সব থেকে পারফেক্ট।
থাইল্যান্ড এমন একটি দেশ যেখানে রয়েছে ভ্রমণ এর সকল আধুনিক সুযোগ-সুবিধা। আর এই সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে হলে আপনার কিছু থাইল্যান্ডের রিকোয়ারমেন্ট পূরণ করতে হবে তাহলে আপনি থাইল্যান্ড টুরিস্ট ভিসা পাবেন তাই আজকে আমরা আপনাদেরকে জানিয়ে দিব থাইল্যান্ডের টুরিস্ট ভিসা কিভাবে পাবেন এবং প্রতিটি ভিসা পেতে কত টাকা খরচ হবে এবং কতদিন সময় লাগবে এই নিয়ে বিস্তারিত তথ্য।
থাইল্যান্ড টুরিস্ট ভিসা ২০২২
প্রতিবছর দৈনিন্দিন জীবনে প্রচুর পরিমাণ পর্যটক পাড়ি জমাচ্ছে থাইল্যান্ডের ছুটি কাটানোর জন্য। তাই রয়াল থাই এম্বাসি সহ বাংলাদেশের মোট পাসপোর্ট ভিসা সার্ভিস চালু আছে বর্তমানে। তাই চাইলে আপনি থাইল্যান্ডের টুরিস্ট ভিসা সাথেই কয়েকটি মাধ্যম অবলম্বন করে থাইল্যান্ডের পাড়ি জমাতে পারেন এবং সেখানে সুন্দর একটি সময়ে স্পেন্ড করতে পারেন।
- থাইল্যান্ড টুরিস্ট ভিসা
- থাইল্যান্ড ট্রানজিট ভিসা
- থাইল্যান্ড ট্রাভেল ভিসা
- ফরেন পাসপোর্ট ভিসা
- ডিপ্লোম্যাটিক পাসপোট এর জন্য ভিসা
আজকে আমরা এই কনটেস্ট এর মাধ্যমে থাইল্যান্ডের ভিসা কিভাবে পাবেন সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি আলোচনার মাধ্যমে জানিয়ে দিব। আপনি যদি আমাদের এই প্রক্রিয়া গুলি পুরোপুরি সম্পূর্ণভাবে ফলো করে থাকেন তাহলে ভিসা পাওয়ার জন্য একেবারে সহজ একটি ব্যাপার হয়ে দাঁড়াবে। বর্তমানে বাংলাদেশের রয়েল থাই এম্বাসি এবং থাইল্যান্ড টুরিস্ট ভিসার জন্য যে সমস্ত কাগজপত্র এবং নিয়মকানুন দিয়ে রেখেছে তা অ্যাপ্লিকেশনে খুব সহজেই তুলে ধরতে পারবেন। সে সমস্ত নিয়মকানুন মেনে আমরা এই প্রক্রিয়াটি সাজিয়ে রেখেছি।
থাইল্যান্ড টুরিস্ট ভিসা কিভাবে পাবেন
থাইল্যান্ড টুরিস্ট ভিসা TR টাইপ টুরিস্ট ভিসা বলা হয়। থাইল্যান্ড টুরিস্ট ভিসার জন্য তিন মাস মেয়াদি এবং মাল্টিপল এন্ট্রি 6 মাস মেয়াদী ভিসার জন্য আপনি আবেদন করতে পারবেন। আপনি যেই ভিসায় নিবেন আপনাকে সেই বিছাতে সর্বোচ্চ 60 দিনের বেশি থাকতে দিবে না। থাইল্যান্ডের ভিসা আপনি ঢাকা-চট্টগ্রাম এবং সিলেট থাই এম্বাসি থেকে সরাসরি করাতে পারবেন। ঢাকায় জমা দিলে সর্বনিম্ন সময় লাগবে 5 কর্মদিবসের মধ্যে। চট্টগ্রামে জমা দিলে সময় লাগবে 6 কর্মদিবসের মধ্যে এবং সিলেটে 7 কর্মদিবসের মধ্যে হয়ে যাবে। সেখানে পাসপোর্ট জমা দেওয়ার পরেই আপনি কবে পাসপোর্ট পাবেন অনলাইনের মাধ্যমে দেখে নিতে পারবেন। তাই পাসপোর্ট নিয়ে আসতে যাওয়ার আগে অবশ্যই পাসপোর্ট অনলাইনের মাধ্যমে দেখেশুনে তারপরেই সেখানে যাবেন না হলে হয়রানির সম্মুখীন হতে পারেন।
জাপানে কাজের ভিসা ২০২২ | জাপান ভ্রমণ ভিসা | জাপান স্টুডেন্ট ভিসা
থাইল্যান্ড টুরিস্ট ভিসা প্রসেসিং
থাইল্যান্ড ভিসা পাওয়ার জন্য তাদের রিকোয়ারমেন্ট অনুযায়ী কিছু কাগজপত্র প্রয়োজন আছে এবং সেইসাথে আপনার ভ্যালি পাসপোর্ট থাকতে হবে। সেই সাথে আপনার অগ্রিম বিমান টিকিট আগে থেকে কেটে রাখতে হবে এবং ফিরতি টিকিট আগে থেকেই কেটে রাখতে হবে। এবং থাইল্যান্ডের ভিসার জন্য যে সমস্ত কাগজপত্র প্রয়োজন তার সবগুলোই অ্যাপ্লিকেশনের সঙ্গে জমা দিতে হবে এবং এম্বাসির যে সকল নিয়ম কানুন আছে তা সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে এবং পর্যায়ক্রমে তিনটি ধাপ পূর্ণ করতে হবে।
তিনটি ধাপ হলো
- অ্যাপ্লিকেশন ফর্ম এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
- ভিসা ফি এবং রিসিপ্ট কপি সংগ্রহ
- অনলাইনে পাসপোর্ট স্ট্যাটাস দেখে পাসপোর্ট সংগ্রহ করা
থাইল্যান্ড টুরিস্ট ভিসা ফি কত
তাহলে টুরিস্ট ভিসা সেই ধরা হয়েছে দুইটি ক্যাটাগরিতে শুধুমাত্র সিঙ্গল ক্যাটাগরির জন্য তিন মাস মেয়াদি সাতদিন পরিমাণ আপনি থাকতে পারবেন সেটার ভিসা ফি ধরা হয়েছে 30000tk সিঙ্গেল এন্ট্রি। আর মাল্টিপল ভিসা ফি ধরা হয়েছে 15 হাজার টাকা ছয় মাস মেয়াদি সর্বোচ্চ 60 দিন পরিমাণ থাকতে পারবেন। সেইসাথে ভিসার সঙ্গে ভিএফএস গ্লোবাল সার্ভিস হিসেবে 800 টাকা এবং ব্যাংক ড্রাপ করতে 40 টাকা খরচ করতে হবে।
বাংলাদেশ থেকে ইতালি যাওয়ার উপায় | ইতালিতে বেতন কত?
থাইল্যান্ড টুরিস্ট ভিসার জন্য কি কি ডকুমেন্ট লাগবে
থাইল্যান্ড টুরিস্ট ভিসার মাধ্যমে আপনি ভ্রমণের জন্য নির্দিষ্ট করে সময় এবং অবস্থান নির্ধারণ করতে হবে। আর থাইল্যান্ড টুরিস্ট ভিসা পাওয়ার জন্য দরকার কিছু রিকোয়ারমেন্টস এই সমস্ত রিকোয়ারমেন্ট যদি আপনি পূরণ করতে পারেন তাহলে খুব সহজেই থাইল্যান্ডের টুরিস্ট ভিসা পেয়ে যাবেন তাহলে চলুন দেখে নেওয়া যাক কি কি ডকুমেন্ট প্রয়োজন তা নিচে তুলে ধরা হলো।
- কমপক্ষে 6 মাস মেয়াদী ভ্যালিড পাসপোর্ট
- জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি
- নিবন্ধন আইডি অনলাইন ফটোগ্রফি
- পাসপোর্ট অফিসে 1530 টাকা থাকা লাগবে
- ভিসা পূর্বে নিয়ে থাকলে ফটোকপি করে দিতে হবে
- দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি
- ছয় মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট
- শিক্ষার্থীর পরিচয় পত্রের ফটোকপি
- চাকরি করলে তার কর্মস্থল এর পরিচয় পত্রের ফটোকপি
- কর্মরত প্রতিষ্ঠান সুপারিশপত্র ছুটির আবেদন
- ট্রাভেল কী উদ্দেশ্যে করবেন সে বিষয়টি উল্লেখ থাকতে হবে
- ভিসা আবেদন ফরম
- ভিসা ফি পরিশোধ
- ভিসার মেয়াদ থাকতে হবে
থাইল্যান্ড টুরিস্ট ভিসার জন্য কিভাবে আবেদন করবেন
হিসাব কার্যক্রম শেষ হলে গুলশানে অবস্থিত ভিএফএস অফিসের মাধ্যমে জমা দিতে হবে। রবিবার সকাল থেকে শুরু করে বৃহস্পতিবার এর যেকোনো দিন আপনি এই ভিসা জমা দিতে পারবেন। ভিসা আবেদন গ্রহণ করা হয় সকাল 8 টা থেকে 11 টা পর্যন্ত 300 টি আবেদনপত্র জমা নেওয়া হয়। সে ক্ষেত্রে ভিতরে যাওয়ার সময় অবশ্যই শুধুমাত্র ডকুমেন্ট এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং পাসপোর্ট হাতে নিয়ে যেতে হবে। সব ডকুমেন্টগুলো আবেদনকারীকে মানি রিসিপ্ট হিসেবে দেওয়া হবে। এবং মানি রিসিট দেওয়ার পূর্বের কাউন্টার থেকে অবশ্যই আপনাকে পাসপোর্ট নেওয়ার একটি স্লিপ প্রদান করা হবে। আরে সংরক্ষণ করে রাখবেন।
ভিসা পেতে কতদিন লাগবে
সাধারণত পাঁচ থেকে সাত দিন এরমধ্যে ভিসা পাসপোর্ট হাতে পাওয়া যায় তবে রবিবার থেকে বৃহস্পতিবার 1 টা থেকে বিকাল 4 টা পর্যন্ত ভিসা পাসপোর্ট বিতরণের কাজ চলে। তাই এই সময়ের মধ্যে গেলেই আপনার কাঙ্খিত ভিসাটি পেয়ে যাবেন আশা করা যায়।
থাইল্যান্ড টুরিস্ট ভিসার যোগ্যতা
থাইল্যান্ড টুরিস্ট ভিসা যে কেউ ইচ্ছা করলে করতে পারবে তবে তার ব্যক্তিগত প্রোফাইল ভালোমতো উপস্থাপন করা লাগবে এবং তার যোগ্যতা নির্ধারণ করা লাগবে আপনি কি কাজে কর্মরত আছেন এবং কতদিনের জন্য থাইল্যান্ডের যেতে চাচ্ছেন সেই বিষয়টি ভালোমতো উল্লেখ করা লাগবে এবং অবশ্যই সাথে ভ্যালিড পাসপোর্ট থাকতে হবে তাহলে আপনি থাইল্যান্ড টুরিস্ট ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। এবং উপরোক্ত যে সমস্ত ডকুমেন্টের প্রয়োজন তার সবগুলোই অবশ্যই আপনার থাকতে হবে এবং 6 মাস মেয়াদী ব্যাংক স্টেটমেন্ট অবশ্যই থাকতে হবে।
থাইল্যান্ড টুরিস্ট ভিসার প্রয়োজনীয় কিছু শর্ত
থাইল্যান্ড টুরিস্ট ভিসা পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কিছু শর্ত রয়েছে তার মধ্যে হোটেল বুকিং ঢাকা ফেরার টিকিট এবং ন্যাশনাল আইডি কার্ডের ফটোকপি সহ বিস্তারিত কিছু বিষয় রয়েছে সেগুলো পর্যায়ক্রমে নিচে তুলে ধরা হলো।
ঢাকা থাইল্যান্ড ঢাকা রিটার্ন টিকিট বুকিং কপি
ঢাকা থেকে থাইল্যান্ড যাওয়ার পরে রিটার্ন আসার জন্য এয়ার টিকিট আগে থেকেই বুকিং করে রাখতে হবে সেই কপি ভিসা আবেদনের সাথে জমা দিতে হবে। এবং ভিসা আবেদন হয়ে গেলে টিকিট কনফার্ম করে ফেলতে পারবেন এক্ষেত্রে আপনি ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে সহযোগিতা নিতে পারেন খুব সহজেই। আর অবশ্যই রিটার্ন টিকিট অগ্রিম তৈরি করে তারপরে ভিসার জন্য আবেদন করবেন।
থাইল্যান্ড হোটেল বুকিং
ভিসা রিকোয়ারমেন্ট এর জন্য থাইল্যান্ড হোটেল বুকিং এর ভিসার কপি দেখাতে হবে আপনি অনলাইনের মাধ্যমে যোগ করেছেন সেটার একটি ডকুমেন্ট তৈরি করে ভিসার আবেদন করতে হবে। এটি শুধুমাত্র একজনের প্রোফাইল দেখানোর জন্য ভিসার জন্য আবেদন করা হয় তবে বর্তমানে কয়েকটি বিষয়ের প্রতি নজর দেওয়ার কারণেই থাইল্যান্ডের আপনি কোথায় থাকবেন এবং কতদিন থাকবেন সেই বিষয়টি দেখভালের জন্য হোটেল বুকিং এর কপি চাওয়া হয়।
ভিসা ফি জমা এবং রিসিভ কপি সংগ্রহ করা
আপনার উপরোক্ত ধাপগুলো কমপ্লিট হলে এখন পূরণকৃত ভিসা ফরম এবং কাগজপত্র সঙ্গে নিয়ে সরাসরি চলে যাবেন ভিএফস অফিসে সেখানে গিয়ে গ্লোবাল সেন্টারের মাধ্যমে টাকা এবং কাগজপত্রগুলো জমা দিয়ে রিসিভ কপি সংগ্রহ করতে হবে। এখানে মনে রাখা ভাল যে আপনি যখন ভিএফএস অফিসে ফাইলগুলো জমা দিতে যাবেন তখন অবশ্যই ফাইলের সাথে মোবাইল ছাড়া অন্যকিছু সঙ্গে নিয়ে যাবেন না। কারণ সেখানে অন্য কিছু নিয়ে যাওয়ার অনুমতি নেই সতর্কতা স্বরূপ বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হল।
পাসপোর্ট স্ট্যাটাস দেখে পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে হবে
এগুলো যখন সবকিছু জমা দিয়ে যাবেন থাইল্যান্ড এম্বাসি মাধ্যমে কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করার জন্য ফোন নাম্বার যাচাই বাছাই করার জন্য আপনাকে ফোন দিতে পারে এ সময় সতর্ক থাকবেন যে ফোন ধরতে যেন মিস না হয় আপনাকে দেওয়া রিসিভ কপি এবং পাসপোর্ট সংগ্রহের তারিখ দেওয়া হবে সেই ফোনের মাধ্যমে। নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী অনলাইনের মাধ্যমে পাসপোর্ট যাচাই বাছাই করে পাসপোর্ট সংগ্রহ করে নিয়ে নিবেন। যদি কোন রকমের ভিসা না হয় বা আবেদনযোগ্য গ্রহণ না হয় তাহলে ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে ভিসা আবেদন করতে চাইলে দেখেশুনে ট্রাভেল এজেন্সি পছন্দ করবেন তারপর এই ভিসার জন্য আবেদন করবেন।
ইউরোপের কোন দেশে যেতে কত টাকা লাগে 2022 | অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার খরচ
সর্বশেষ কথা
ভিসা প্রসেস এর জন্য প্রদত্ত যে কোনো ডকুমেন্ট যদি আপনার জালিয়াতি বাজাল প্রমাণ হয়ে থাকে তাহলে আপনার ভিসার আবেদন নিশ্চিতভাবে বাতিল হয়ে যাবে এমনকি আপনার বিদেশ যাওয়া বন্ধ হয়ে যেতে পারে শুধুমাত্র থাইল্যান্ড টুরিস্ট এর জন্য। তাছাড়া আপনারা আয়নীয় দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে ধরা হতে পারে সুতরাং এ ধরনের যদি কোন ভুল-ভ্রান্তি কিছু থেকে থাকে তাহলে ভিসার জন্য আবেদন না করাই ভালো এবং সে দেশে না পাড়ি জমানো ভালো।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন