এটি একটি উত্তর-পশ্চিম ইউরোপের একটি দেশ হলো বেলজিয়াম এটি ইউরোপিয়ান ইউনিয়নভুক্ত উত্তর-পশ্চিম অঞ্চল। উন্নত এই দেশটিতে ইতিহাসের উত্থান-পতনের অনেক গল্প আছে। বিশ্বযুদ্ধের কারণে এই দেশটি একসময় জার্মানির দখলে ছিল। বর্তমানে এটি একটি ইউরোপীয় সমাজব্যবস্থা দ্বারা পরিচালিত হয়ে থাকে। বর্তমানে উচ্চশিক্ষার জন্য এবং অর্থনীতি ও মানসম্পন্ন সুযোগ সুবিধা থাকার কারণে বাংলাদেশী ছাত্রছাত্রীদের জন্য এই বৃষ্টি হয়ে উঠতে পারে সুবর্ণ একটি সুযোগ। তাই আজকে আমরা কথা বলবো বেলজিয়ামের স্টুডেন্ট ভিসা কিভাবে পাবেন এবং এখানে স্কলার্শিপ কিভাবে পাবেন এই নিয়ে বিস্তারিত ভাবে আমরা এই কনটেন্টে মাধ্যমে আলোচনা করব।
বাংলাদেশ সহ এশিয়া মহাদেশের অন্যান্য দেশগুলো থেকে অনেকেই ইউরোপের দেশগুলোতে উচ্চশিক্ষার জন্য পানি জমে থাকে তাই অনেকেই সঠিক প্রসেস সম্পর্কে জানেনা আমরা এই কনটেন্ট এর মাধ্যমে বেলজিয়ামে স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে কীভাবে যাবেন এবং আবেদন কিভাবে করবেন এই নিয়ে আমরা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করবো।
বেলজিয়ামে কেন পড়তে যাবেন
বর্তমানে বেলজিয়ামে শিক্ষার মান অনেক উন্নত এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত প্রাপ্ত এসমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। বিশ্বের টপ রাংকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বেলজিয়ামের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থাকবেই। বর্তমানে বেলজিয়ামের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে হাতে কলমে শিক্ষা দানের কারণে তাদের স্টুডেন্টরা বিভিন্ন বড় বড় কোম্পানি এবং আইটি স্পেশালিস্ট হয়ে উঠেছে তাই এ সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কেনার সুযোগ নিতে চাই এবং এ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিভিন্ন রকম সুযোগ-সুবিধা রয়েছে যেমন স্কলারশিপ পাওয়ার সুযোগ এবং কোর্স ফী অনেকটাই কম।
বেলজিয়াম স্টুডেন্ট ভিসা
বেলজিয়ামে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ডাচ ভাষায় পড়াশোনা করানো হয়। তাই যারা বেলজিয়ামে উচ্চশিক্ষার জন্য যেতে চাচ্ছেন তারা অবশ্যই ডান্স ভাষা ভালোমতো শিখে দক্ষতা অর্জন করে তারপরেই স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে তার সাথে দরকার ইংরেজি ভাষার একটি ভালো দক্ষ কোর্স করতে হবে আপনাকে যেখানে আইএলটিএস স্কোর মিনিমাম 5 থেকে 7 পর্যন্ত থাকা লাগবে তারপরে আপনি আবেদনের জন্য যোগ্য হবেন।
তবে যেসব শিক্ষার্থীরা স্নাতক পর্যায়ে ইংলিশ মাধ্যমে পড়াশোনা করেছে তারা আইএলটিএস ছাড়াই মাস্টার্স এর জন্য আবেদন করতে পারবে বেলজিয়ামে তবে অবশ্যই একাডেমিক পরীক্ষায় কমপক্ষে 60 শতাংশ মার্কস থাকা লাগবে তার পরেই সে বেলজিয়ামের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মাস্টার্স করার জন্য আবেদন করতে পারবে।
ইউরোপের কোন দেশে যেতে কত টাকা লাগে 2022 | অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার খরচ
বেলজিয়ামে স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা
বেলজিয়ামে স্টুডেন্ট ভিসা পেতে হলে অবশ্যই ডাচ ভাষা ভালোমতো জানা লাগবে সেইসাথে আইএলটিএস স্কোর 6.5 থেকে শুরু করে 7 থাকতে হবে এবং পাশাপাশি মাস্টার্স করার জন্য অবশ্যই একাডেমিক পরীক্ষায় থাকতে হবে। এবং তাছাড়া পর্যায় ক্রমে কয়েকটি ভাইবার মাধ্যমেই আপনাকে তারা সিলেট করবে পাশাপাশি আপনি যদি বিভিন্ন ওয়েব বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে জানতে চান তাহলে আপনাকে ইমেইলের মাধ্যমে জানিয়ে দিবে তাদের রিকোয়ারমেন্ট গুলো।
বেলজিয়ামের পড়াশোনা করতে খরচ কত
বর্তমানে বেলজিয়ামে পড়াশোনার খরচ ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেকটাই কম খরচ। ইউরোপিয়ান দেশগুলোর বাহিরে থেকে যারা পড়াশোনা করার জন্য শিক্ষার্থীরা প্রতিবছর বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন টিউশন ফি বাবদ খরচ হয়ে থাকে 850 থেকে 4000 হাজার 500 ইউরো এর মত। তাছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তুলনামূলকভাবে শিক্ষাবৃত্তির বিভিন্ন ধরনের সুযোগ রয়েছে এবং থাকা খাওয়া সহ অন্যান্য খরচ বাবদ মাসে 450 থেকে 600 ইউরো খরচ হয়ে থাকে। একাডেমিক পরীক্ষাগুলোতে যদি ভাল ফলাফল পাই তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ দিয়ে থাকে।
তাছাড়াও থাকা খাওয়া বাবদ যদি মাসে 450 থেকে 600 ইউরো খরচ হয় তার কারণে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে যেমন পাঁচ বছরে থাকার পরে কিছু শর্ত মেনে আপনি স্থায়ীভাবে থাকার জন্য সে দেশের সরকারের কাছে আপনি আবেদন করতে পারবেন পাশাপাশি যদি আপনি সেখানে জব ম্যানেজ করতে পারেন তাহলে পার্মানেন্ট ভাবে থাকার জন্য আপনি গ্রীন কার্ড পেয়ে যাবেন।
বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্যে পড়াশোনা | লন্ডনের সর্বনিম্ন বেতন সম্পর্কে
বেলজিয়ামে কি কি কোর্স করানো হয়
বেলজিয়ামের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ব্যাচেলর ডিগ্রী মাস্টার্স ডিগ্রি ও পিএইচডি পর্যায়ে বিভিন্ন ধরনের কোর্স চালু আছে তাছাড়া অ্যাডভান্স লেভেলের বিভিন্ন ধরনের স্পেশাল কোর্স করানো হয়। সাধারণত এখানে ব্যাচেলার কোর্সগুলো তিন বছর মেয়াদী। যে সমস্ত কোর্স এখানে চালু আছে জিওগ্রাফি, সার্জারি, প্যাথলজি, মেডিসিন এন্ড হেলথ সাইন্স, টেলিকমিউনিকেশন, নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ারিং, কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রিক্যাল পাওয়ার, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং, ফার্মেসি, ভেটেনারি, কম্পিউটার সাইন্স, অ্যানিমেশন মাল্টিমিডিয়া, ইকোনমিক্স, বিজনেস, ম্যাথমেটিক্স, ডাটা সাইন্স, ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, গ্রিক, জার্মান, আর্কিওলজি, নরডিক স্টাডি, হর্টিকালচার ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ, বিভিন্ন ধরনের নানা যুগোপযোগী কোর্স বিদ্যামান আছে এসমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে।
বিদেশ যাওয়ার জন্য কোন ব্যাংক লোন দেয় দেখে নিন
স্কলার্শিপ ও আয়ের সুযোগ
এ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আপনি যদি চান্স পান ট্রান্সফার করে বিভিন্ন ধরনের স্কলারশিপ পাওয়ার সুযোগ আছে এসমস্ত স্কলারশিপ এর মাধ্যমে আপনারা অনেক কিছুই করে নিতে পারবেন তাছাড়াও ভালো পড়াশোনা দেখাতে পারলে সে সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্পেশালভাবে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ এবং ছাড় দেওয়া হয়ে থাকে।
বেলজিয়ামের এসমস্ত বিদেশি শিক্ষার্থীদের সপ্তাহে 15 থেকে 20 ঘণ্টা বিভিন্ন ধরনের পার্ট টাইম জব করার সুযোগ রয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তাছাড়াও গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে 90 দিন ফুলটাইম যে কোন পেশায় কাজ করার জন্য অনুমতি দেওয়া হয়ে থাকে এ সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের। তাই চাইলে যে কেউ এই সমস্ত ফ্রি টাইমে অথবা সপ্তাহে 15 থেকে 20 ঘণ্টা পার টাইম জব করার সুযোগ তৈরি করতে পারবে।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কিভাবে আবেদন করবেন
বেলজিয়ামের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়াশোনার জন্য আবেদন করতে হলে অবশ্যই এসএসসি এবং এইচএসসি এবং অনার্স সার্টিফিকেট থাকতে হবে। পাশাপাশি বেলজিয়ামে পড়াশোনার জন্য নির্দিষ্ট কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির জন্য প্রসপেক্টাসে বিভিন্ন জায়গায় আপনারা আবেদন করতে পারবেন সে সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে।
এসমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সেপ্টেম্বর থেকে শুরু করে মার্চ মাস পর্যন্ত আবেদন করার সুযোগ থাকে non-european স্টুডেন্টদের জন্য। আবেদন করার জন্য অবশ্যই বেলজিয়ামের বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট গুলো থেকে ভর্তির তারিখ দেখে নিতে হবে এবং আবেদন করার সময় অবশ্যই এসএসসি এবং এইচএসসি এবং অনার্স সার্টিফিকেট মতিভেশনাল লেটার রেফারেন্স লেটার প্রয়োজন পড়বে।
সেই সাথে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুলো নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে রেজিস্টার কর্তৃক সত্যায়িত করে নিতে হবে এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বেলজিয়াম কনস্যুলেট থেকে সেগুলো সত্যায়িত থাকতে হবে। এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের ঠিকানা বরাবর ডাক যোগাযোগের মাধ্যমে পাঠিয়ে দিতে হবে। তাছাড়াও আরও বিস্তারিত যদি জানার প্রয়োজন হয় তাহলে বেলজিয়ামের দ্রুত বাস হতে অথবা বেলজিয়ামের স্টাডি বিভিন্ন ধরনের রয়েছে সেই সমস্ত বিষয় থেকে আপনারা জেনে নিতে পারেন।
বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্যে পড়াশোনা 2022 | লন্ডনের সর্বনিম্ন বেতন সম্পর্কে
স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন করতে কি কি লাগবে
বেলজিয়ামের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আবেদন করার জন্য মিনিমাম কিছু যোগ্যতার প্রয়োজন আছে এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুলো সঙ্গে নিয়ে বেলজিয়ামের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ডাক যোগাযোগের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুলো জমা দিতে হবে।
- এসএসসি সার্টিফিকেটের ফটোকপি
- এইচএসসির সার্টিফিকেটের ফটোকপি
- আইএলটিএস স্কোর সার্টিফিকেট
- পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বরাবর সত্যায়িত
- দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি
- এনআইডি কার্ডের ফটোকপি
- বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক সনদপত্র
এই সমস্ত কাগজপত্র রেডি করার পরে প্রয়োজনীয় যে সমস্ত সিগনেচার প্রয়োজন তার সম্পূর্ণ করার পরে ডাক যোগাযোগের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন ঠিকানায় পাঠিয়ে দিতে হবে।
পড়াশোনা করার পর চাকরির সুযোগ
বেলজিয়ামের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়াশোনা শেষ করার পরে তাদের বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা তৈরি হয়ে থাকে সাধারণত বেলজিয়ামের বিভিন্ন গভমেন্ট জব পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে জবের সুযোগ তৈরী হয়ে থাকে তাই এই সমস্ত সুযোগগুলো তৈরি করে নিয়ে আপনারা বেলজিয়ামে বিভিন্ন ধরনের চাকরি করতে পারবেন পাশাপাশি বেলজিয়ামের বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইটগুলোতে খোঁজাখুঁজি করে আপনারা বিভিন্ন ধরনের নিয়োজিত হতে পারবেন।
চায়না স্কলারশিপ ২০২২ | চায়না স্কলারশিপ কিভাবে আবেদন করবেন? খরচ সহ বিস্তারিত
বেলজিয়ামের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট
বেলজিয়ামের কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট তুলে ধরা হলো এই সমস্ত ওয়েব সাইট থেকে খুব সহজেই আপনারা স্টুডেন্টদের প্রয়োজনীয় রিকোয়ারমেন্ট গুলো সম্পর্কে আপনারা বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন।
- www.kuleuven.be
- www.ugent.be
- uclouvain.be
- www.vub.be
- www.topuniversities.com
- www2.ulb.ac.be
- www.mastersportal.com
- www.study.eu
এসমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট গুলো থেকে আপনার প্রয়োজনীয় দক্ষতা অনুযায়ী কিকি রিকোয়ারমেন্ট আছে সেই রিকোয়ারমেন্ট অনুযায়ী আপনারা আবেদন করতে পারবেন অথবা তাদের সাপোর্ট এগিয়ে কথা বলে আপনার কি কি দক্ষতা প্রয়োজন সে সম্পর্কে জেনে নিতে পারবেন এই ছিল আজকে আমাদের বেলজিয়ামের স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে বিস্তারিত তথ্য ধন্যবাদ সবাইকে।
রোমানিয়া কোন কাজের চাহিদা বেশি? সুযোগ সুবিধা কেমন এবং সেলারি কত?
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন