১ম, ২য়, তৃতীয় সিজার কত সপ্তাহে করা যায়

    ১ম, ২য় তৃতীয় সিজার কত সপ্তাহে করা যায়


    এক সময় মানুষ ভাবতে পারেনি এ নরমাল ডেলিভারি পরিবর্তে সিজার করা লাগবে। তবে বর্তমানে এমন একটি পরিস্থিতি হয়ে এসে দাঁড়িয়েছে যে নরমালের সংখ্যার থেকে সিজারের সংখ্যা প্রতিনিয়ত দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। কেউ কেউ হয়তো বা প্রথমবার সিজারের সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন আবার অনেকেই দ্বিতীয়বার দ্বিতীয়বার সিজার করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন তবে অনেকেই জানেন না যে কত সপ্তাহে সিজার করতে হয় এই নিয়ে বিস্তারিত ভাবে আমরা আজকের এই কনটেন্টে তুলে ধরেছি।


    অনেকের মধ্যেই প্রশ্ন জাগে যে কত সপ্তাহে প্রথম সিজার করতে হয় অথবা দ্বিতীয় সিজার কত সপ্তাহে করতে হয় এই নিয়ে অনেকের মধ্যেই অনেক ধরনের ধারণা রয়েছে তবে এক্ষেত্রে একজ্যাক্ট গত সপ্তাহের মধ্যে করতে হয় তা আপনি না জানলে ভুল ডিসিশন নিতে পারেন তাই আজকে আমরা আপনাদেরকে এই বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত ভাবে জানিয়ে দিব।


    আল্ট্রাসাউন্ড এর মাধ্যমে অনেক জটিল সমস্যা এখন ধরা পড়ে, যা আগে কখনই আমাদের জানার উপায় ছিল না যেমন জরায়ুতে কয়টা বাচ্চা আছে এবং গর্ভে কোন ধরনের সমস্যা আছে কিনা, পেটের মধ্যে বাচ্চার শ্বাসকষ্ট হচ্ছে কিনা এবং বাচ্চা যে পানিতে আছে সেই পানির পরিমাণ ঠিকমতো আছে কিনা এই বিষয়গুলো সবকিছুই ডাক্তার এখন আল্ট্রাসনোগ্রাফির মাধ্যমে দেখে একটি সিদ্ধান্ত নিতে পারে।


    বিষয়গুলো যদি ঠিকঠাক না থাকে তাহলে ডাক্তার সিজার করার সিদ্ধান্ত নেয় অথবা দ্রুত সিজার করার পরামর্শ দিতে পারে এ বিষয়গুলো যদি পরিবর্তন লক্ষ্য করে। তাছাড়া অন্যান্য কোন সমস্যার কারণেও হয়তোবা ডাক্তার দ্রুত সিজারের সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তাই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সিজারের দিন নির্ধারিত করায় সবথেকে উত্তম পদ্ধতি।


    যে কারণে সিজার করা লাগতে পারে

    • নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যথেষ্ট পরিমাণ স্বাভাবিক প্রসব না হয়
    • প্রসবব্যথা চলাকালে যদি মা বাচ্চার শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হয়
    • বাচ্চা যদি উল্টো ভাবে নিচের দিকে পা দিয়ে গর্ভে অবস্থান করে
    • মায়ের হূদরোগ ডায়াবেটিকস এবং ইনফেকশনজনিত সমস্যা থাকলে
    • গর্ভে যমজ বাচ্চা থাকে তাহলে
    • গর্ভবতী প্লাসেন্টা প্রিভিয়া হলে
    • চাপ না হলে বা কষ্ট মুক্ত প্রসবের জন্য সিজার করতে হতে পারে
    • যদি পূর্ববর্তী বা ততোধিক সিজার ডেলিভারি থাকলে

    উপরোক্ত কারণগুলো যদি হয়ে থাকে তাহলে সিজারের পরামর্শ দিয়ে থাকে ডাক্তাররা। তাছাড়াও রোগীর পরিস্থিতি অনুযায়ী সিজারের জন্য বিবেচনা করে থাকে তাই প্রথম অবস্থায় আল্ট্রাসনোগ্রাফির মাধ্যমে এই সমস্ত বিষয় গুলা যদি দেখা যায় তাহলে ডাক্তাররা তাৎক্ষণিকভাবেই সিজারের পরামর্শ দিবে।


    সিজার করার খরচ কত দেখে নিন


    প্রথম সিজার কখন করাবেন

    প্রথমবার গর্ভবতী হলে অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে তারমধ্যে অন্যতম সমস্যা হলো জরায়ুতে একের অধিক বাচ্চা থাকা, গর্ভফুল নিচে থাকলে, বাচ্চার মাথা বড় হওয়া বাচ্চার পজিশন যদি ঠিক না থাকে উল্টা থাকে, পেটের মধ্যে বাচ্চা উল্টো থাকলে, বাচ্চা যে পানিতে আছে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি কম থাকলে, প্রসাবের রাস্তা যদি ছোট থাকে ইত্যাদি বড় কারণগুলো দেখা দিলে প্রথমবার  আলট্রাসনোর সম্ভাব্য তারিখ অনুযায়ী ৩৮ সপ্তাহের মধ্যেই সিজার করাতে হবে।


    এক্ষেত্রে সম্ভাব্য তারিখ অনুযায়ী ৩৮ সপ্তাহের মধ্যে সিজার করলে কোন ধরনের ভেন্টিলেটরে এ রাখার প্রয়োজন নাই । তবে গর্ভ অবস্থায় যদি বড় কোন ধরনের সমস্যা দেখা দেয় তাহলে ৩৮ সপ্তাহের আগেও সিজার করা হয়ে থাকে এটা প্রেগনেন্সির অবস্থার ওপর নির্ভর করেই সিজার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় তবে এক্ষেত্রে একজনের সাথে অন্যজনের মিল নাও থাকতে পারে ।


    সিজারের কাটা স্থানে ব্যথা হলে কি করবেন


    দ্বিতীয় সিজার কখন করাতে হয়

    প্রথম বাচ্চা যদি সিজারে হয়ে থাকে তাহলে দ্বিতীয় বাচ্চা সিজারে করাতে হবে এমন কোন নিয়ম নেই। দ্বিতীয় বাচ্চার সময় যদি গর্ভবতীর শারীরিক অবস্থা এবং বাচ্চার পজিশন যদি ঠিক থাকে তাহলে নরমাল ডেলিভারি করা সম্ভব। তবে প্রথম সিজার করার যে কারণ ছিল সে কারণ যদি দ্বিতীয় বাচ্চার ক্ষেত্রেও দেখা দেয় তাহলে পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার আগেই সিজার করাতে হবে। 


    সাধারণত দ্বিতীয় সিজার করা হয় প্রথম আল্ট্রাসাউন্ড এর সম্ভাব্য তারিখ এর দুই সপ্তাহ আগে। যদি গর্ভে বাচ্চার সংখ্যা একের অধিক থাকে তাহলে 3 থেকে 4 সপ্তাহ আগে সিজার করানোর প্রয়োজন পড়তে পারে। সবটাই ডিপেন্ড করে বাচ্চার শারীরিক পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে এবং গর্ভবতীর গর্ভাবস্থার পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে।


    সিজারের পর কসমেটিক সার্জারি ভালো নাকি নরমাল সেলাই


    তৃতীয় সিজার কত সপ্তাহে করা যায়

    প্রথম ও দ্বিতীয় সিজারের পর তৃতীয় বা তার উপরে বাচ্চা নিলে নরমাল ডেলিভারি হওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই নেই বললেই চলে। তৃতীয় সিজারের প্রক্রিয়া অনেকটা দ্বিতীয় সিজারের মত হয়ে থাকে। তৃতীয় সিজারের প্রক্রিয়া অনেকটা দ্বিতীয় সিজারের মতোই প্রথম আল্ট্রাসাউন্ডের সম্ভাব্য তারিখের দুই সপ্তাহ আগেই করাতে পারেন। বাকিটা গর্ভবতীর গর্ভ অবস্থার উপর নির্ভর করে এবং বাচ্চার শারীরিক পরিস্থিতির উপর বিবেচনা করেই দ্বিতীয় সিজারের সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে ডাক্তাররা।


    সিজারের কাটা ঘা শুকাতে কতদিন লাগে এবং মলম


    গর্ভ অবস্থায় সি-সেকশন ডেলিভারির সম্ভাবনা দিনদিন প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে তবে প্রথমবার সিজারের পর। দ্বিতীয় প্রসবের সময় কোন ধরনের জটিলতা না থাকলে যৌনির মাধ্যমেই নরমাল ডেলিভারি করা সম্ভব হতে পারে। তবে একটি পরিকল্পিত সি-সেকশন ডেলিভারি এর মাধ্যমে মা এবং সন্তান উভয়ের জন্যই জীবন রক্ষণ হতে পারে। যদিও বেশির ভাগ মায়ের কাছে যোনিপথে প্রত্যাশিত। তবে এটি বোঝা গুরুত্বপূর্ণ যে c-section ডেলিভারি যথেষ্ট নিরাপদ যা আপনার অনাগত সন্তানের জীবন বাঁচাতে পারে।

    একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

    Post a Comment (0)

    নবীনতর পূর্বতন