সিজারের পর ব্যথা হলে করণীয়
সিজারের পরে বেশি ব্যথা হওয়ার কারণ হল দেড় মাসের আগে হাঁটাচলা বাঁ সিঁড়িতে উঠা নামা করার কারণে হয়ে থাকে। ওষুধের ডোজ কমপ্লিট না করার কারণে। ভারী জিনিসপত্র বহন করা সিজার রোগীর যত্নের ত্রুটি থাকা। মূলত এগুলো জটিল কোনো সমস্যা না। যে ডাক্তারের মাধ্যমে অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল সেই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করতে হবে।
তা ছাড়াও বিভিন্ন কারণে সিজারের পর ব্যথা হতে পারে যেমন স্বামী স্ত্রী সহবাস করার কারণে অথবা অস্বাভাবিক ভাবে চলাফেরা এবং বিভিন্ন ধরনের ভারী জিনিসপত্র বহন করার কারণেই মূলত সিজারের পর ব্যথা অনুভূত হয়। এ ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন যাবত এই ব্যথা হতে পারে। তাই উচিত হবে সম্পূর্ণভাবে ডাক্তারের পরামর্শ এবং নির্দেশনা অনুযায়ী সিজার রোগীর চলাফেরা করা।
সিজারের পর ইনফেকশনের লক্ষণ
- প্রচন্ডভাবে পেটে ব্যথা অনুভূত হওয়া
- সিজারের চারপাশে লাল হয়ে ফুলে যাওয়া
- সিজারের স্থান থেকে ফুসকা বা পুঁজ বের হওয়া
- প্রস্রাব করার সময় ব্যথা অনুভূত হওয়া
- সিজারের স্থান থেকে দুর্গন্ধ রক্ত বের হওয়া
- মাসিকের রাস্তা দিয়ে গন্ধ যুক্ত তরল পদার্থ আশা
- ঘন্টায় ঘন্টায় কাপড় বা প্যাড ভিজে যাওয়া
- গায়ে জ্বর জ্বর ভাব হওয়া
- প্রসাবে জমাট বাঁধা রক্ত আসা
- পা ফুলে যাওয়া
অনেক কারণে মেয়েদের সিজারের পর ইনফেকশনের লক্ষণ দেখা দেয়। সিজারের পরে যদি এই লক্ষণগুলো বুঝতে পারেন তাহলে ধরে নিতে হবে আপনার সিজারের স্থানে ইনফেকশন দেখা দিয়েছে। তাই ওপরের এই লক্ষণগুলি বুঝতে পারলেই সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করতে হবে।
সিজারে ইনফেকশন হলে করণীয় কি
সিজার ইনফেকশনের লক্ষণ দেখা দিলে কোনোভাবেই এটি অবহেলা করা উচিত নয় দ্রুত চিকিৎসকের শরনাপন্ন হওয়া উচিত। অথবা আপনি যেই ডাক্তারের মাধ্যমে শেয়ার করেছেন সেই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী পরবর্তী ওষুধগুলো সেবন করতে হবে। কাটা অংশ থেকে পুঁজ বের হলে কালচার সেনসিটিভিটি টেস্ট করানোর পর নির্বাচন করতে পারে। এবং ডাক্তারের প্রয়োজনীয় এনটিবেটিক অনুযায়ী চিকিৎসা নেই সিজার ইনফেকশন দূর করা সম্ভব।
সিজারের পর পেট কমানোর উপায়
সিজারের পর পেট কমানোর জন্য মিষ্টি জাতীয় খাবার খাবার তালিকা থেকে ছেঁটে ফেলুন। সন্তানের বয়স যখন সাত থেকে আট মাস হবে তখন সলিড খাবার খাওয়া শুরু করুন। সিজারের পর পেট কমানোর জন্য ভাত খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দিতে হবে এবং শাকসবজি ফল খেতে হবে। তবে আপনাদের জেনে রাখা উচিত যে সিজারের পর পেট কমানোর জন্য না খেয়ে থাকা যাবে না তা না হলে শিশুর জন্য মারাত্মকভাবে ক্ষতি হতে পারে।
সিজারের পর যদি দেখেন পেট অতিমাত্রায় বড় হয়ে যাচ্ছে তাহলে নিয়মিত বেল্ট ব্যবহার করুন বেল্ট পড়ে থাকতে যতই বিরক্ত লাগুক না কেন চেষ্টা করবেন সবসময় বেল্ট পড়ে থাকার। এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ এবং এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী যেগুলো আছে সেগুলো করতে থাকুন। এতে বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যাবে।
আরো পড়ুন: চুল পড়া বন্ধ করার উপায় ও চুল পড়া বন্ধ করার ঔষধ
তবে মনে রাখবেন ডাক্তার যে ব্যায়ামগুলো সাধারণত দিয়ে থাকে সেটা বাচ্চার তিন মাসের পর থেকেই এগুলো করতে হবে এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী আপনারা সেগুলো করতে থাকবেন তাহলে সিজারের পর পেট কমার সম্ভাবনা বেশি থাকবে এবং সর্বদা চেষ্টা করবেন সব সবজি এবং নিয়মিত পানি পান করার তাহলেই সুস্থ-সবল এবং পেট কমার সম্ভাবনা বেশি থাকবে।
সিজারের পর ব্যথা কতদিন থাকে
সিজারের পরে ৫ মাস পর্যন্ত পেটে ব্যথা থাকতে পারে। তবে অনেকেরই ২ থেকে ৩ মাসের মধ্যেই সম্পূর্ণভাবে ব্যথা নির্মূল হয়ে যায়। তবে পাঁচ মাস পর্যন্ত স্বাভাবিকভাবে কোন ব্যথা থাকলে এটি কোন জটিল সমস্যার না। তবে অতিরিক্ত হাঁটাচলা করা অথবা সেটি ব্যবহার করে থাকলে ব্যথা বাড়তে থাকবে। এবং স্বামী স্ত্রী যদি অধিক মিলামিশা করে এবং ভারী জিনিস বহন করার কারণে দীর্ঘদিন যাবৎ ব্যথা দেখা দিতে পারে।
সিজারের পর খাবার তালিকা
- আশ যুক্ত ফল
- মটরশুটি
- সবুজ শাকসবজি
- স্ট্রবেরি
- মিষ্টি আলু
- মসুর ডাল
- সালাদ
- শসা
- ডাব
সিজার রোগীর জন্য ডেলিভারির পরে অনেক সময় কষ্টোকাঠিনো সমস্যা হয়ে থাকে। এমনতো অবস্থায় খাদ্যতালিকায় বেশি মাত্রায় ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার রাখতে হবে। এবং খাদ্য তালিকায় অবশ্যই সবুজ শাকসবজি এবং ফল রাখতে হবে। সিজার ডেলিভারি পানির ঘাটতি হয়ে থাকে তাই পানিশূন্যতার জন্য সমস্যা বেড়ে যায় তাই প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে।
আরো পড়ুন: নাইট ক্রিম ব্যবহারের নিয়ম | ফর্সা হওয়ার ডাক্তারি ক্রিম
সেইসাথে ভেষজ চা, ডাবের পানি এবং সুপ, আদা গাজর, স্যুপ টমেটো স্যুপ তাজা খাবার সহ সবুজ শাকসবজি খেতে হবে এতে করে সিজারের রোগী সুস্থ সবল থাকেএবং দ্রুত সিজারের ক্ষতস্থান শুকাতে সাহায্য করবে। এসময় বাহিরের খাবার কম খেতে হবে পাঁচ থেকে ছয় মাস তাজা রান্না করা খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন।
সিজারের পর কতদিন জার্নি করা যায়
সিজারের পর মিনিমাম তিন মাস কোন ধরনের জার্নি করা উচিত না। তবে সিজারের পর ক্ষতস্থানে কোন ধরনের ব্যথা না দেখা দিলে সে ক্ষেত্রে আড়াই মাস পরে অল্প পরিসরে জার্নি করা যেতে পারে। তবে অবশ্যই কোন ধরনের ভারি মালামাল বহন করা যাবে না এবং অধিক পরিমাণ হাঁটাচলা করা যাবে না এতে করে সিজারের ক্ষত স্থানে ব্যথা অনুভূত হতে পারে অথবা সমস্যা দেখা দিতে পারে।
সিজারের পর কাশি হলে করণীয়
সিজারের পরে কাশি হলে সিজারের স্থানে ব্যথা অনুভূত হতে পারে অথবা ব্যথার সমস্যা আরো তীব্র আকারে বেড়ে যেতে পারে। সিজার রোগীর যদি কাশি দেখা দেয় তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করতে হবে অথবা যেই ডাক্তারের মাধ্যমে আপনার অস্ত্রোপচার করা হয়েছে সে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করুন।
সিজারের পর কলা খাওয়া যাবে
সিজারের পরে পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে এক্ষেত্রে ফলমূল এবং সবুজ শাকসবজি এবং নিয়মিত পানি পান করতে হবে। তবে যাদের কলা খাওয়ার কারণে এলার্জি হয় তারা কলা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। আপনি যে ডাক্তারের মাধ্যমে সিজার করেছেন সে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খাবার তালিকা করে নিতে হবে।
সিজারের পর কি আনারস খাওয়া যাবে
আসলে টক জাতীয় ফল খাবার কারণে ঘা শুকাতে সাহায্য করে এবং প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে টক জাতীয় ফল গুলাতে। অপারেশনের পরে ভিটামিন সি যুক্ত খাবার খাওয়া প্রয়োজন। এক্ষেত্রে কামরাঙ্গা, জাম্বুরা ইত্যাদি ফলগুলো খেতে পারবেন। এতে করে ক্ষতস্থানে মাংসপেশির হতে সাহায্য করে। তবে আপনার ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খাদ্য তালিকা তৈরি করে নিতে হবে। আপনার যদি অন্য কোন সমস্যা থেকে থাকে এবং স্পেসিফিক কোন খাবারে যদি এলার্জি থেকে থাকে তাহলে সেটা আপনাকে বলতে হবে।
আরো পড়ুন: মুখের ঘা এর ঔষধের নাম | মুখে ঘা দূর করার উপায়
সিজারের পর কতদিন ভারী কাজ করা যায়
সিজারের পর মিনিমাম তিন মাস পর্যন্ত কোন ধরনের কাজ করা উচিত না। এক্ষেত্রে দৈহিক মিলন করতে হবে এবং ভারী কোন জিনিস সরানো থেকে বিরত থাকুন এবং সিঁড়ি ব্যবহার করার চেষ্টা করুন। অধিক পরিমাণ হাঁটাচলা করা যাবে না এতে করে আপনার সিজারের ক্ষত স্থানে ব্যথা অনুভূত হতে পারে এবং এমনকি এভাবে যদি চলতে থাকে তাহলে পরবর্তীতে যেকোনো সময় আপনার সিজারের ক্ষতস্থানে ইনফেকশন দেখা দিতে পারে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন