আজকে আমরা কথা বলব পিল খাওয়ার নিয়মাবলী নিয়ে এবং পিল খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে বিস্তারিত ভাবে এই আর্টিকেলের মধ্যে তুলে ধরেছি আশা করি সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি যদি আপনারা পড়েন তাহলে খাওয়ার নিয়ম নিয়ে বিস্তারিত জানতে পারবেন। তাছাড়াও এখানে আমরা পিল নিয়ে নানা ধরনের আলোচনা করেছি তাহলে চলুন দেখে নেওয়া যাক বিল খাওয়ার নিয়মাবলী নিয়ে বিস্তারিত তথ্য।
অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণের ঝুঁকি কমানোর জন্য অনেকেই জন্মনিরোধক পিল সেবন করে থাকেন। তবে এই জন্মনিরোধক পিল প্রতিনিয়ত নানা ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। কি কি সমস্যা হয়ে থাকে এবং কি কি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এই নিয়ে বিস্তারিত ভাবে আজকের এই আর্টিকেলের মধ্যেই আলোচনা করেছি আশা করি এই বিষয় নিয়েও আপনারা জানতে পারবেন।
পিল খাওয়ার নিয়ম জানতে চাই
মাসিক হওয়ার তৃতীয় দিন থেকেই পঞ্চম দিনের মধ্যেই পিল খাওয়া শুরু করতে হবে। এরপর থেকে প্রতিদিন একই সময়ে একটা করে পিল সেবন করতে হবে। টানা ২১ খাওয়ার পর বাদ দিতে হবে। এরই মধ্যে যদি কারো পিল সেবন করা বাদ পড়ে যায় তাহলে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যখনই মনে পড়বে তখনই খেয়ে ফেলতে হবে। সেই দিনের সেইদিনের ডোজ যথাসময়ে আবার খেয়ে ফেলতে হবে।
উপরের নিয়মে এর মধ্যেই পিল সেবন করতে হবে যদি এরই মধ্যে আপনি একদিন অথবা দুই দিনের বেশি মিস করে থাকেন তাহলে আপনাদেরকে বিকল্প কোন পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে তা না হলে একটি রিস্ক থেকেই যাবে। তাই অবশ্যই চেষ্টা করবেন যথাসময়ে মধ্যেই পিল সেবন করা। তারপরে আমরা জানিয়ে দিব আপনাদের একদিন অথবা দুই দিনের মিস হলে কিভাবে সেটি কভার করবেন এই নিয়ে নিচে তুলে ধরলাম।
পিল খাওয়া মিস হলে কি করবেন
মোছাম্মদ ডাক্তার আফরোজা সরকার বলেন মাসিক হওয়ার সাত দিনের মধ্যে যদি একটা ফিল্মিস হয় তাহলে ২৪ ঘন্টার মধ্যে মিস হওয়া পিল খেয়ে নিতে পারবে। কিন্তু কারো যদি দুইটা পিল খাওয়া মিস হয় তাহলে মাসিকের সবথেকে ১৪ তম দিনে অথবা ২১ তম দিনে হয় তাহলে তার যখন মনে পড়বে তখনই খেয়ে ফেলতে হবে। এ ক্ষেত্রে দুইটা পিল একসঙ্গে খেয়ে নিতে পারবে। তবে পরবর্তী ১৪ দিন পর্যন্ত কন্ট্রাসেপটিভ অথবা বেরিয়ার মেথড বা কনডম ব্যবহার করতে হবে।
তা না হলে আনওয়ান্টেড প্রেগনেন্সি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। আনওয়ান্টেড প্রেগনেন্সি থেকে এবরশনের হার বেশি হয়ে থাকে তাই চেষ্টা করবেন যথাসময়ে পিল সেবন করা এবং অন্য কোন পদ্ধতি ব্যবহার করা। এবং কারো যদি ২১ দিনের পরবর্তী ২১ দিনের কাছাকাছি সময়ে শেষের সাতদিনের পিল মিস হয়। তাহলে সে ক্ষেত্রে পিলের পাতা ফেলে দিতে হবে। তারপরে কিছুদিন ওয়েট করে দেখতে পারেন মাসিক হয় কিনা। তা না হলে আবার নতুন পাতা শুরু করতে পারেন।
পিল কখন খাবেন
- যদি সঠিকভাবে কনডম ব্যবহার না করা হয় তাহলে পিল খেতে হবে।
- জন্মনিরোধক বরি খাওয়া ভুলে গেলে
- জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক করতে বাধ্য করলে
- মাসিক হওয়ার তিন দিনের মধ্যেই খেতে হবে
- প্রত্যেকদিন যে সময়ে পিল সেবন করেন সেই সময়ে খেতে হবে
পিল কারা খাবেন
কোন নারী যদি ইতিমধ্যে গর্ভবতী হয়ে থাকে এবং অস্থায়ীভাবে জন্ম নিয়ন্ত্রণ করার জন্য পিল খেতে পারবেন। অনিয়ন্ত্রিত শারীরিক সম্পর্ক থাকলে পিল সেবন করা উচিত। এবং জন্মনিরোধক পিল যদি নিয়মিত না খেতে পারেন তাহলে কিন্তু পরবর্তীতে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে এমনকি এবরশন করা লাগতে পারে। তাই অবশ্যই নিয়মিত পিল সেবন করতে হবে এবং এই বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে।
আরো পড়ুন: জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল খাওয়া কি জায়েজ | ইসলামে পিল খাওয়া কি হারাম
পিল খাওয়ার উপকারিতা
- নিয়মিত পিল সেবন করলে দেহের বিভিন্ন ঝুঁকিরঅবসান ঘটে
- এমোনিয়া, আরিয়ান সিস্ট, আর্থারাইটিস, একটোপিক, ইত্যাদির সম্ভাবনা কমে যায়
- পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে অস্বস্তিকর যন্ত্রণা থেকে মুক্তি মিলে
- যৌনাঙ্গের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়
- নিয়মিত পিল সেবন করলে অনিয়ন্ত্রিত প্রেগনেন্সি থেকে মুক্তি মিলে
- বন্ধ করে দিলে আবার স্বাভাবিক ভাবে গর্ভধারণ করা যায়
এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের সমস্যা থাকলে তা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়। তবে অবশ্যই প্রথম অবস্থায় ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করতে হবে কারো যদি কোনো মারাত্মক কোন সমস্যা থাকে তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী এবং তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী সেবন করার চেষ্টা করবেন তা না হলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
প্রথমবার পিল খাওয়ার নিয়ম
প্রথমবার পিল খাওয়ার নিয়ম হলো মাসিক হওয়ার তিন দিনের মধ্যেই প্রথম পিল খাওয়া শুরু করতে হবে। এরপর প্রতিদিন একই সময়ে নিয়মিত পিল খেতে হবে। যদি কোনভাবে পিল খাওয়া মিস হয়ে যায় তাহলে পরবর্তী 24 ঘন্টার মধ্যে যেকোনো সময় খেয়ে ফেলতে হবে। প্রথম অবস্থায় একদিন মিস হওয়া মাত্র এই কাজটি করতে পারবেন এবং পরবর্তীতে 24 দিনের পর 28 দিনের মধ্যে একসঙ্গে মিস হওয়া পিল গুলো খেয়ে ফেলতে পারবেন।
পিল খাওয়ার অপকারিতা
35 বছরের বেশি বয়সের পিল খাওয়া কখনই উচিত না। অথবা যেসব মেয়েদের মাইগ্রেনের সমস্যা রয়েছে তারা আপিল কন্টিনিউ করতে থাকলে স্ট্রোকের সম্ভাবনা বেশি থাকে। উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার উল্লেখযোগ্য কারণ হলো পিল সেবন করা। বেশি বেশি পিল সেবন করলে থেম্বো এম্বলিস্ম সম্ভাবনা বেশি থাকে। বেশি মাথা ঘোড়া সহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা যায়।
- নিয়মিত পিল খেলে সেক্স করে আনন্দ পাই না
- বেস্ট এই অনেক ব্যথা অনুভূত হয়
- বমি বমি ভাব হবে এবং অনেক সময় বমি হবে
- অতিরিক্ত মাত্রায় ওজন বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা
- তিন বছরের অধিক সময় পিল খেলে তাদের গ্লুকোমা হয়
- খিটখিটে মেজাজ এবং কোন কাজে মন না বসা
- হতাশ হয়ে যাওয়ার কারণ হলো অতিরিক্ত পিল খাওয়া
- উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে
আরো পড়ুন: নাইট ক্রিম ব্যবহারের নিয়ম | ফর্সা হওয়ার ডাক্তারি ক্রিম
পিল খাওয়ার পর মাসিক না হলে কি করনীয়
পিল খাওয়ার পর মাসিক না হলে বাদামী বর্ণের পিল খেতে হবে তাহলে মাসিক হয়ে যাবে। এবং প্রচুর পরিমাণ পানি খেতে হবে। সবুজ শাকসবজি বেশি করে খেতে হবে তার পরেও যদি কোন ভাবেই মাসিক না হয় তাহলে ভালো কোনো চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পরবর্তী ওষুধ সেবন করতে হবে।
পিল খাওয়ার পর রক্তপাত
অস্বাভাবিকভাবে মাসিকে রক্তপাত হওয়ার কারণ হল ইমারজেন্সি পিল সেবন করা। এটি নরমাল মাসিকের রক্ত পাত তবে এক্ষেত্রে ইমারজেন্সি পিল খাওয়ার কারণে অতিরিক্ত ভাবে বের হয়ে যাচ্ছে। যদি অনিয়মিতভাবে রক্তপাত হতে থাকে তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এবং আপনাদের জেনে রাখা উচিত যে ইমার্জেন্সি পিলের কারণেই নানান ধরনের সাইড ইফেক্ট হতে পারে। এমনকি দুই থেকে তিন মাস পর্যন্ত এরকম দেখা দিতে পারে। তাই ভালো কোন গাইনি ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত।
পিল খাওয়ার পর পেট ব্যথা
পিল খাওয়ার কারণে পেটে ব্যথা হতে পারে এটি একটি পিল খাওয়ার সাইড ইফেক্ট। পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবে পেট ব্যথা, মাথাব্যথা, বমি হওয়া, মেজাজ খিটখিটে, মাথা ঘোরা, বিষন্নতা, পেটে মোচড় দেওয়া, বেশি ক্ষুধা অনুভূত হওয়া, সহ বিভিন্ন ধরনের সাইডিফেক্ট দেখা যায়। যদি এগুলো অস্বাভাবিক মাত্রায় দেখা যায় তাহলে অবশ্যই একটি গাইনি ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী পরবর্তী ওষুধ সেবন করতে হবে।
অস্থায়ীভাবে জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য পিল খাওয়া জায়েজ আছে বা অন্য কোন পদ্ধতি গ্রহণ করা যাবে। তবে অবশ্যই স্থায়ীভাবে যদি জন্ম নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কোন ধরনের পিল অথবা ওষুধ সেবন করে থাকে তাহলে সম্পূর্ণরূপে এটি হারাম।
পিল খাওয়ার পর ব্লিডিং হওয়ার কারণ
সাধারণত ইমার্জেন্সি পিল খেলে ব্লিডিং হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। নরমাল ভাবে যদি কোন ব্লিডিং দেখা যায় তাহলে এটা ভয়ের কোন কারণ না। কারণ ইমারজেন্সি পিল খাওয়ার কারনে নরমালের থেকে একটু বেশি মাত্রায় ব্লিডিং হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে তবে অতিরিক্ত মাত্রায় যদি ব্লিডিং হয় তাহলে অবশ্যই ভালো কোন ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী পরবর্তী ওষুধ সেবন করতে হবে।
তবে প্রথম অবস্থায় যদি অতিরিক্ত মাত্রায় ব্লিডিং দেখা যায় এবং ব্লিডিং হওয়ার সাথে সাথে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিচ্ছে তাহলে অবশ্যই ভালো কোন ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে তা না হলে রোগের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে তাই অবশ্যই চেষ্টা করবেন ইমারজেন্সি পিল সেবন করার আগে সেই বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে জেনে নেওয়া।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন