বাচ্চারা কত মাসে কথা বলতে পারে ও বাচ্চার কথা বলার বয়স

    বাচ্চারা কত মাসে কথা বলতে পারে


    বাচ্চাদের বড় হওয়ার মুহূর্তগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি স্মরণীয় মুহূর্ত হলো তার মুখের কথা বলতে পারা। বয়স তিন বছর হতেই বাচ্চারা মূলত কথা বলা শিখে যাই। সাধারণত এক বছর বয়সের পর থেকেই বাচ্চার মুখের প্রথম কথা শোনা যায়। পরবর্তীতে দুই বছরে বাচ্চার তিনটি শব্দ বলতে পারার মতো সামর্থ্য হয়ে যায়। বয়স আড়াই বছর অথবা তিন বছর না হতেই ছোট ছোট বাক্য বলতে শিখে ফেলে বাচ্চা।

    সাধারণত বিশেষজ্ঞদের মধ্যে বাচ্চার ভাষা বোঝার প্রক্রিয়া শুরু হয় যখন সে মায়ের পেটে অবস্থান করে। তখন থেকে মূলত বাচ্চা তার মায়ের ভাষা এবং এবং যেগুলো শুনে সেগুলোই বোঝার চেষ্টা করে। আপনার গর্ভের বাচ্চা যেভাবে আপনার হার্টবিটের সাথে পরিচিত হবে তেমনি ভাবেই গর্ভে থাকা আপনার গলার স্বর খুব সহজেই বাচ্চা বোঝার ক্ষমতা রাখে। এবং তার মায়ের গলার স্বর অন্যদের থেকে আলাদা করার ক্ষমতা রাখে।

    অনেক সময় দেখা যায় বাচ্চারা কান্নাকাটি করার মুহূর্তে যদি অন্য কারো কাছে অবস্থান করে এবং তার মায়ের কাছে যখন পুনরায় আসে তখন কিন্তু তার মায়ের গলার স্বর অথবা গায়ের গন্ধেই সে বুঝে ফেলে যে এই মুহূর্তে তার মায়ের কোলে অবস্থান করছে। নতুন বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এ বিষয়টি খুব ভালো মতো গুরুত্ব সহকারে দেখলেই আপনারা বুঝতে পারবেন।

    বাচ্চারা কখন কথা বলা শুরু করে

    বলতো বাচ্চারা এক বছর বয়সের পর থেকেই মুখে শব্দ করা শুরু করে। এ ক্ষেত্রে অনেকেই মা অথবা বাবা ডাক দিয়েই কথা বলা শুরু করতে থাকে অথবা খুবই কমন শক্ত অথবা খুবই ছোট শব্দ দিয়ে কথা বলা শুরু করে। পরবর্তীতে তিন বছরের মধ্যে একটি বাচ্চা পরিপূর্ণ বাক্য বলার ক্ষমতা অর্জন করে ফেলে। তবে অনেক ক্ষেত্রে বাচ্চাদের মানসিক সমস্যার কারণে কথা বলা কিছুটা দেরিতেও হয়ে থাকে।

    এক্ষেত্রে বর্তমান সময়ে আমাদের অসতর্ক থাকার কারণেই মূলত এমনটা হয়ে থাকে। বর্তমান সময়ে বাচ্চাদেরকে অধিক সময় মোবাইল দিয়ে রাখা অথবা মোবাইল ফোনের ভিডিও প্লে করে বাচ্চাদেরকে দেখানোর কারণেই মূলত তারা কথা বলার অথবা নিজের অ্যাক্টিভিটিস তৈরি করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।

    যদি কোন বাচ্চা কথা বলতে দেরি করে অথবা তিন বছর পার হওয়ার পরেও কোন ধরনের কথা বলছে না তাহলে কিন্তু অবশ্যই আপনাকে সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি এই সময় কোন ধরনের মোবাইল ফোন নিজেও ব্যবহার কম করবেন এবং বাচ্চাকেও ব্যবহার কম করাবেন। কেননা অনেক সময় বাচ্চাদেরকে মোবাইল ফোনের গান শুনে অথবা কার্টুন দেখিয়ে তারা বসিয়ে রাখে কেননা এই বাচ্চাগুলো প্রথম অবস্থায় খুব কান্নাকাটি করে থাকে তাই তাদেরকে বিনোদন দিয়ে থামিয়ে রাখা হয়।



    কিন্তু এমনটা যদি করে থাকেন তাহলে আপনার বাচ্চার ক্ষতি আপনি নিজেই করছেন তাই অবশ্যই মোবাইল ফোন থেকে দূরে রাখবেন। অভিজ্ঞ ডাক্তার বলছে যদি তিন বছর বয়সে বাচ্চার মোবাইলের প্রতি আসক্ত বেড়ে যায় তাহলে কিন্তু তার মেধা বিকাশে বাধা প্রাপ্ত হতে পারে তাই অবশ্যই এগুলো থেকে বিরত রাখবেন।

    বাচ্চাদের কথা বলার বয়স

    বাচ্চার কথা বলার বয়স হলো এক বছর থেকে তিন বছরের মধ্যে। মূলত ছয় মাস বয়স থেকেই বাচ্চা ছোট শব্দ উচ্চারণ করার ক্ষমতা রাখে। এক বছর পর থেকে একটি শব্দ অথবা দুটি শব্দ উচ্চারণ করতে পারবে। দুই বছরের মধ্যে সম্পূর্ণরূপে দুইটি শব্দ উচ্চারণ করার ক্ষমতা রাখে অনেক সময় দুই বছর থেকে তিন বছরের মধ্যে তিনটি শব্দ বা পরিপূর্ণ বাক্য উচ্চারণ করতে পারে।

    তাই এক কথায় বলা যায় বাচ্চার সম্পূর্ণভাবে একটি পূর্ণাঙ্গ বাক্য উচ্চারণ করার জন্য তিন বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে। তবে এক্ষেত্রে অনেক বাচ্চাই দুই বছরের মধ্যেই সম্পূর্ণভাবে ভাগ্য উচ্চারণ করে ফেলে।

    ছয় মাস বয়স থেকেই ছোট ছোট শব্দ উচ্চারণ করার ক্ষমতা রাখে এ ক্ষেত্রে তার সঙ্গে অধিক পরিমাণ নতুন মানুষের সঙ্গে মেলামেশা এবং শোনার ক্ষমতা যদি ভালো থাকে তাহলে কিন্তু অল্প বয়সের মধ্যেই সম্পূর্ণরূপে বাক্য উচ্চারণ করার ক্ষমতা অর্জন করতে পারে। তাই বাচ্চার শ্রবণ শক্তি যদি ভালো থাকে তাহলে খুব সহজেই বাচ্চা দ্রুত কথা বলতে পারবে।

    কিভাবে বাচ্চাদেরকে কথা বলা শিখাবেন

    বাচ্চা যখন এক বছর বয়স থেকে কথা বলা শুরু করে তখন থেকে তাকে ছোট ছোট শব্দগুলো বেশি বেশি বলানো উচিত। এ ক্ষেত্রে তার হাসি খুশির মুহূর্তে ছোট ছোট বাক্য গুলো বেশি বেশি বলানোর চেষ্টা করবেন এবং যখনই সুযোগ পাবেন তখনই বাচ্চার মুখ দিয়ে কথা বের করার চেষ্টা করবেন। এবং একটা মানুষ ব্যতীত অনেক মানুষের সাথে কথা বলানোর চেষ্টা করবেন। বাড়ির অন্যান্য ফ্যামিলিদের সাথেও যাতে সে কমফোর্টেবল ভাবে মিশতে পারে এবং কথা বলতে পারে এভাবে তাদের সঙ্গে ওঠাবসা করাবেন।

    এভাবে যদি কিছুদিন চেষ্টা করে থাকেন তাহলে বাচ্চারা খুব সহজেই কথা বলতে আগ্রহ দেখাবে এবং ছোট ছোট বাক্যগুলো দুই বছরের মধ্যেই অনেকটাই আয়ত্ত করে ফেলবে। অনেক বাচ্চা আছে 15 মাস অথবা দুই বছরের মধ্যেই পরিপূর্ণ বাক্যে কথা বলতে পারে। তবে সর্বোচ্চ তিন বছরের মধ্যে যদি কোন ধরনের বাক্য পরিপূর্ণভাবে না বলতে পারে তাহলে কিন্তু বাচ্চার সমস্যা আছে।


    এক্ষেত্রে অবশ্যই মোবাইল ফোন থেকে দূরে রাখবেন এবং বাচ্চাদেরকে অপরিচিত মানুষের সঙ্গে কথা বলানোর চেষ্টা করবেন এতে করে বাচ্চার আগ্রহ বেশি দেখা যায় এবং সে তার কথাগুলো মনোযোগ দিয়ে শোনার চেষ্টা করে। এভাবে যদি অপরিচিত মানুষের সঙ্গে কথা বলানো শিখাতে পারেন তাহলে তার মেধা বিকাশের সাহায্য করবে এবং সে কথা শোনার আগ্রহ দেখাবে।

    বাচ্চারা কথা কি বুঝতে পারে

    মূলত যখন পাঁচ মাস থেকে ছয় মাস বয়স হয় বাচ্চার তখন সে প্রথম শব্দ করে হাসতে শুরু করে থাকে। এ সময় কথা বলার জন্য তার মুখের যন্ত্র গুলো ধীরে ধীরে প্রস্তুতি নিতে থাকে যখন পরিপূর্ণভাবে চার থেকে পাঁচ মাস হয়ে যায় তখন স্বরধনের মত কিছু বাক্য উচ্চারণ করতে থাকে।

    মূলত ছয় মাস বয়স থেকেই শিশুর গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি দেখা যায়। এ সময় যেসব ধোনির বাক্য গুলো বের করার চেষ্টা করে সেগুলো জোড়া লাগিয়ে নতুন ধরনের ধনী ও উচ্চারণ করতে পারার ক্ষমতা হয়ে যায়। নতুন ধরনের ধ্বনি বা উচ্চারণ করে যেমন মা , বাবা, দাদা, নানী, এই টাইপের শব্দগুলো করতে থাকে।

    আবার কোন কোন ধনী একইভাবে উচ্চারণ করতে থাকে এবং এককভাবে প্রতিনিয়ত এই শব্দটাই ব্যবহার করতে থাকে তখন অন্য কোন ধনী তার কানের কাছে বেশি বেশি উচ্চারণ করতে থাকা যদি সেগুলো করতে থাকেন তাহলে একপর্যায়ে সেই সমস্ত ভাষাগুলো আস্তে আস্তে শিখে ফেলতে পারে।


    ইংরেজিতে শিশুর ভাষাকে বলা হয় ব্যাবলিং। এটি চলতে থাকে ছয় থেকে আট মাস পর্যন্ত। এর মধ্যে অনেক ভাষায় মিলে যেতে পারে অনেক ক্ষেত্রে। তবে এক্ষেত্রে নতুন নতুন ভাষা শব্দগুলো ছোট ছোট শব্দগুলো তাকে শেখানো উচিত এতে করে সে পরবর্তীতে খুব দ্রুত শিখে ফেলবে। এবং বাড়ির অন্যান্য ফ্যামিলি ও যাতে তার সাথে ভালো মতো কথা বলে এই বিষয়গুলো লক্ষ্য করবেন। তাহলেই খুব দ্রুত ভাষা শেখার প্রতি আগ্রহ দেখাবে বাচ্চা।

    বাচ্চাদের কথা বলা শেখানো

    বাচ্চাদের কথা বলা শেখানোর সময় অবশ্যই ছোট ছোট ভাগ্য গুলো ব্যবহার করবেন যেমন মা, বাবা, দাদা, নানা ইত্যাদি বাক্যগুলো। এতে করে বাচ্চা খুব সহজেই শব্দগুলো উচ্চারণ করতে পারবে এবং নতুন নতুন মানুষের দ্বারা এই শব্দগুলো শোনানোর চেষ্টা করবেন এতে করে খুব সহজেই বাচ্চা কথা বলা শিখতে পারবে।

    এবং চেষ্টা করবেন ফ্যামিলির অন্যান্য সদস্যর দ্বারাও তার সঙ্গে কথা বলানো এতে করে বাচ্চা তাড়াতাড়ি কথা বলার আগ্রহ দেখাবে এবং অন্যের কথা মনোযোগ সহকারে শোনার চেষ্টা করবে সেই বাচ্চা যতটা মনোযোগ সহকারে কথা শুনবে সেই বাচ্চা তত তাড়াতাড়ি কথা বলার চেষ্টা করবে এবং সহজেই কথা বলার আগ্রহ দেখাবে।

    বাচ্চাদের কথা না বলার কারণ

    বাচ্চা কথা না বলার কারণ অনেকগুলো হতে পারে এক্ষেত্রে বর্তমান সময়ে সবথেকে বড় সমস্যা হল বাচ্চাকে মোবাইলে আসক্ত করা। কারণ ছোট বাচ্চারা অনেক সময় বেশি পরিমাণ কান্নাকাটি করে এক্ষেত্রে তাদেরকে মোবাইলের মাধ্যমে বিনোদন দেওয়ার চেষ্টা করে এক্ষেত্রে যখন মোবাইলের উপর আসক্ত হয়ে যায় তখন বাচ্চারা কিন্তু কথা বলার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে।

    প্রথম কথা বলার বয়স হলো এক বছর থেকে তিন বছরের মধ্যে এক্ষেত্রে এই বয়সটার মধ্যে যখন আপনার বাচ্চা কান্নাকাটি করবে তখন তার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করবেন এবং অন্যান্য ফ্যামিলির সদস্যদের সাথেও যোগাযোগ করার চেষ্টা করবেন এতে করে বাচ্চার নতুন ভাষা শিখার আগ্রহ তৈরি হবে।

    এক্ষেত্রে অনেক সময় দেখা যায় যে বাচ্চাদেরকে মোবাইল দিয়ে বসিয়ে রাখা হয় অথবা মোবাইল দিয়ে অন্যান্য কাজ করা হয়ে থাকে। তাই অবশ্যই চেষ্টা করবেন এই সময় বাচ্চাকে একেবারে মোবাইল থেকে দূরে রাখা এবং যদি ফ্যামিলির অন্যান্য সদস্য থাকে তাদের সাথে বসতে দেওয়া এবং কথা বলতে দেওয়া এতে করে বাচ্চা খুব সহজেই কথা বলার চেষ্টা বা আগ্রহ দেখাবে।

    একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

    Post a Comment (0)

    নবীনতর পূর্বতন