গামবোরো রোগ: মুরগির জন্য ভ্যাকসিনের নাম, দাম এবং প্রতিরোধের সেরা সমাধান

    গামবোরো রোগ


    গামবোরো রোগ মূলত একটি ভাইরাসজনিত রোগ। এই রোগটি মুরগির হিউমান সিস্টেমকে খুব দ্রুতই আক্রমণ করতে পারে। যখন কোন মুরগির গামবোরো হয় তখন তার শরীরে মারাত্মকভাবে এটি প্রভাব ফেলে। বিশেষ করে যখন মুরগির বয়স তরুণ থাকে তখন গামবোরো রোগের লক্ষণ দেখা দেয় এবং তখন স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে।


    তাই গামবোরো রোগের লক্ষণ হিসাবে খাবারের প্রতি আগ্রহ একেবারে কমে যায় শ্বাসকষ্ট এবং বেশি দুর্বলতা দেখা দেয়। এবং আরো অনেক ধরনের লক্ষণ দেখা দেয়। গামবোরো মুরগির কি কি লক্ষণ দেখা দেয় এবং কিভাবে এটার প্রতিকার করবেন এবং কোন ভ্যাকসিন দেওয়া উচিত তা পর্যায়ক্রমে আমরা এই কন্টেন্টের মধ্যে তুলে ধরেছি। তাই চলুন দেখে নেওয়া যাক প্রথম লক্ষণ গুলো কি কি।


    গামবোরো রোগের লক্ষণসমূহ:

    মুরগির গামবোরো হলে কিভাবে বুঝবেন তার লক্ষণ পয়েন্ট আকারে গুলো তুলে ধরা হলো:

    • মুরগি খাওয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে।
    • মুরগি বিমর্ষ বা অলস থাকে, চলাফেরা কমে যায়।
    • মুরগি অতিরিক্ত পানি পান করতে থাকে।
    • মুরগি চলাফেরা করতে সমস্যা অনুভব করে, মুরগি ঝুলে পড়তে পারে।
    • মুরগির মল পাতলা এবং সাদা রঙের হয়।
    • পাখনা ঝুলে পড়ে এবং মুরগি কম উড়ে।
    • শ্বাস নিতে সমস্যা হয়, কাশি বা সর্দি হয়।
    • শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়।
    • চোখে ঝাপসা ভাব বা প্রদাহ দেখা দেয়।
    • মুরগির লিটার খারাপ হয়ে যায়


    এ সময় গুলো মুরগির পাশে যথেষ্ট সময় দেওয়া উচিত এবং দ্রুত ট্রিটমেন্ট নেওয়া উচিত তা না হলে কম সংখ্যক মুরগিকে যদি প্রথমে আক্রমণ করে ফেলে তাহলে কিন্তু পরবর্তীতে খুব দ্রুতই গামবোরো ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং অন্যান্য ভালো মুরগী কেউ কিন্তু গামবোরো আক্রান্ত করে ফেলবে। তা কিভাবে চিকিৎসা নিবেন তা পর্যায়ক্রমে নিচে দেখুন।


    ইনকিউবেটর এবং ডিম ফুটানোর মেশিনের দাম : নতুন ও পুরাতনের সম্পূর্ণ তালিকা


    মুরগির গামবোরো রোগের চিকিৎসা

    গামবোরো এটি একটি মুরগির ভাইরাস জনিত রোগ তরুণ মুরগিকে আক্রান্ত করে তার হিউম্যান সিস্টেম নষ্ট করে ফেলে। গামবোরো রোগের কোনো নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই, তবে সঠিক প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ করলে মুরগিকে সুস্থ রাখা সম্ভব।


    গামবোরো রোগের প্রাথমিক প্রতিরোধ হলো ভ্যাকসিন, যা মুরগির বয়স অনুসারে প্রয়োগ করতে হয়। সাধারণত ৭-১০ দিনের মধ্যে প্রথম ডোজ এবং ২১ দিনের মধ্যে বুস্টার ডোজ কমপ্লিট করতে হয়। এই ভ্যাকসিন মুরগির শরীরে ইমিউনিটি তৈরি করে থাকে, যা গামবোরো রোগটি থেকে সুরক্ষা প্রদান করে। তবে,গামবোরো রোগটি সঠিকভাবে প্রতিরোধ করা না গেলে মুরগি দুর্বল হয়ে পড়ে, খাবার কম খায় এবং অন্যান্য সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে মুরগির ওজন একেবারে কম হতে পারে।


    এছাড়াও, গামবোরো রোগের চিকিৎসার জন্য মুরগির পুষ্টির দিকে নজর দেওয়া অত্যন্ত জরুরি। আক্রান্ত মুরগির ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হয়ে পড়লে মুরগি বাড়তে পারে না, তাদের শক্তিশালী ফিড এবং ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার এবং ওষুধ সরবরাহ করা উচিত। সঠিক পরিমাণে পানি এবং সহজ হজমযোগ্য খাবারও দেওয়া দরকার, যাতে তারা দ্রুত শক্তি ফিরে পায় বড় হতে ভূমিকা রাখে। 


    যেহেতু গামবোরো রোগ সাধারণত এক ধরনের ভাইরাস, তাই ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন হলে ভেটেরিনারি চিকিৎসকের পরামর্শে অ্যান্টিবায়োটিকস ও সাপ্লিমেন্টস ব্যবহার করতে হবে। গামবোরো রোগটির তীব্রতা কমানোর জন্য মুরগির আশপাশের পরিবেশও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। সবশেষে, গামবোরো রোগের প্রাথমিক লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত ভেটেরিনারি পরামর্শ নেওয়া উচিত, যাতে সঠিক চিকিৎসা ব্যবস্থা নেয়া যায়।


     রোমানিয়া ভিসা প্রসেসিং এজেন্সি কোথায় জেনে নিন


    মুরগির গামবোরো রোগের কারণ

    মুরগির গামবোরো রোগ মূলত কয়েকটি কারণে হয়ে থাকে ভাইরাস সংক্রমিত মুরগির মাধ্যমে, দূষিত খাবার পানি পান করলে, ভাইরাসের মাধ্যমে অনেক সময় গাম্বুরা রোগ ছড়িয়ে পড়ে। আক্রান্ত মুরগির সংস্পর্শে গেলেও মুরগির গামবোরো দেখা দিতে পারে। সঠিক সময় যদি মুরগির টিকা না দেওয়া হয় তাহলেও মুরগির গামবোরো রোগের লক্ষণ দেখা দেয়। সঠিক সময়ে মুরগির টিকা দিন এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পরিবেশে মুরগি পালন করুন।


     গামবোরো ভাইরাসটি আক্রমণ করলে যেকোন ভালো মুরগিকেও আক্রান্ত করতে বেশি সময় নেয় না। তাই অবশ্যই দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিকস এবং সাপ্লিমেন্টস ব্যবহার করুন এতে করে খুব দ্রুতই অন্যান্য মুরগি আক্রান্ত হওয়া থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। মনে রাখবেন এই রোগটি এতটাই মারাত্মক যে একটা খামারের সমস্ত মুরগি কেউ খুব দ্রুত আক্রান্ত করে ফেলতে পারে।


    গামবোরো ভ্যাকসিন এর দাম

    গামবোরো ভ্যাকসিন এর দাম বাজার এবং ব্যান্ড অনুযায়ী ভিন্ন। তবে এটি মুরগির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ভেকসিন। মুরগির ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করতে সহায়তা করে মুরগির সটিরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। পর্যায়ক্রমে গামবোরো ভ্যাকসিন এর দামের তালিকা তুলে ধরা হলো:

    ভ্যাকসিনের নাম ডোজ সংখ্যা দাম
    গামবোরো ইনফ্লুয়েঞ্জা ভ্যাকসিন ১০০ ডোজ ১০০ - ২০০ টাকা
    গামবোরো ভাইরাস ভ্যাকসিন ৫০০ ডোজ ৫০০ - ১,০০০ টাকা
    বুরসাল গামবোরো ভ্যাকসিন ১০০ ডোজ ২০০ - ৩০০ টাকা
    ডাল্টন গামবোরো ভ্যাকসিন ৫০০ ডোজ ৭০০ - ১,২০০ টাকা
    মাইক্রো গামবোরো ভ্যাকসিন ১০০ ডোজ ১৫০ - ২৫০ টাকা
    এক্সপ্রেস গামবোরো ভ্যাকসিন ২০০ ডোজ ৩০০ - ৫০০ টাকা
    ডাবল ক্লিন গামবোরো ভ্যাকসিন ১,০০০ ডোজ ১,২০০ - ২,০০০ টাকা


    যদি প্রথম খামারি হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই এই ভ্যাকসিন গুলো ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী দিবেন এবং ৭ থেকে ১৪ দিনের মধ্যে কিন্তু দুটি ভ্যাকসিন কমপ্লিট করা লাগে তবে এক এক কোম্পানির বাচ্চার ক্ষেত্রে কিন্তু তারা একেক রকম ভাবে সাজেস্ট করে থাকে তাই অবশ্যই ভালো কোনটা হয় সেটা ভালো কোন ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী গামবোরো ভ্যাকসিন নিশ্চিত করা উচিত।


    বিদেশ যাওয়ার জন্য কোন ব্যাংক লোন দেয় দেখে নিন


    গামবোরো ভ্যাকসিনের নাম ও দাম

    গামপাড়া রোগের ভ্যাকসিনের নাম এবং দাম উল্লেখ করা হলো তবে এই দাম বাজারভেদে কিন্তু কিছুটা কম বেশি হতে পারে:

    ভ্যাকসিনের নাম দাম
    হুয়ানচেং গামবোরো ভ্যাকসিন ১০০ - ২০০ টাকা
    গামবোরো ভাইরাস ভ্যাকসিন ৫০০ - ১,০০০ টাকা
    ডাল্টন গামবোরো ভ্যাকসিন ৭০০ - ১,২০০ টাকা
    এমএসডি গামবোরো ভ্যাকসিন ১৫০ - ২৫০ টাকা
    কোডিংটন গামবোরো ভ্যাকসিন ৩০০ - ৫০০ টাকা
    গামবোরো ইনফ্লুয়েঞ্জা ভ্যাকসিন ৫০০ - ৭০০ টাকা
    ডাবল ক্লিন গামবোরো ভ্যাকসিন ১,২০০ - ২,০০০ টাকা
    বুরসাল গামবোরো ভ্যাকসিন ২০০ - ৩০০ টাকা
    এফএফএল গামবোরো ভ্যাকসিন ৪০০ - ৬০০ টাকা
    ফ্লুক্স গামবোরো ভ্যাকসিন ১৫০ - ২৫০ টাকা


    তবে এই ভ্যাকসিনগুলো অবশ্যই আপনার মুরগির পরিস্থিতি অনুযায়ী এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবহার করা উচিত এক্ষেত্রে অবশ্যই মুরগির বর্তমান পরিস্থিতি কি এবং দেওয়া যাবে কিনা এবং কতটা খারাপ হয়েছে সেই দিকে বিবেচনা করেই মূলত গামবোরো ভ্যাকসিন দিবেন


    গামবোরো ভ্যাকসিন দেয়ার নিয়ম

    গামবোরো ভ্যাকসিন দেওয়ার সঠিক নিয়ম অনুসরণ করা গুরুত্বপূর্ণ। মুরগির ৭-১০ দিনের বয়সে প্রথম ডোজ দেওয়া হয় এবং এরপর ১৪ দিনে বুস্টার ডোজ প্রদান করা হয়। ভ্যাকসিনটি ইনজেকশন বা পানির মাধ্যমে প্রয়োগ করা হতে পারে অথবা চোখের ড্রপের মাধ্যমে, যা মুরগির বয়স এবং খামারের পরিবেশ অনুযায়ী হতে পারে।


    ভ্যাকসিন প্রয়োগের আগে মুরগির স্বাস্থ্যের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। অসুস্থ মুরগিকে ভ্যাকসিন না দেওয়াই ভালো এবং বাচ্চাও অবস্থায় যদি দুর্বল থাকে তাহলে কিছুদিন পরে দেয়া উচিত। ভ্যাকসিন দেওয়ার পর মুরগির বিশ্রাম এবং পরিষ্কার পরিবেশে রাখা দরকার। নিয়মিত টিকাদান ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ এবং খাবার নিশ্চিত করে গামবোরো রোগ থেকে মুরগির সুরক্ষা বৃদ্ধি করা সম্ভব।


    সৌদি আরবে কোন কাজের চাহিদা বেশি  | সৌদি আরবে জরুরী নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি


    ব্রয়লার মুরগির গামবোরো রোগের চিকিৎসা

    বয়লার মুরগির গামবোরো চিকিৎসার জন্য অবশ্যই সঠিক পদ্ধতি অবলম্বন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বয়লার মুরগির জন্য প্রধান প্রতিরোধ ব্যবস্থা হল ভ্যাকসিন দেওয়া। সাত থেকে দশ দিন বয়সের মধ্যেই প্রথম ভ্যাকসিন নিশ্চিত করতে হবে পরবর্তীতে ২১ দিনের মধ্যেই বুস্টার ডোজ সম্পন্ন করুন। পরবর্তীতে মুরগির শরীরে যদি কোন সংক্রমণ বা দ্বিতীয় পর্বের কোন সংক্রমণ দেখা দেয় তাহলে এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করুন।


    এছাড়াও বয়লার মুরগিকে পর্যাপ্ত পানি এবং সসং খাবার খাওয়াতে হবে যাতে মুরগির শরীরের শক্তি বজায় রাখতে পারে এবং মুরগি যাতে সুস্থ থাকে। যখন গামবোরো রোগে আক্রান্ত হয় তখন কিন্তু হাঁটাচলা কম করে এবং খাবার কম খায় তাই এই সময় শক্তি বজায় রাখা খুবই জরুরী।


    এছাড়াও বয়লার মুরগির জন্য অবশ্যই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পরিবেশ রাখতে হবে স্টেজ মুক্ত পরিবেশে মুরগিকে রাখার চেষ্টা করুন। এছাড়াও যদি বেশি সংখ্যক মুরগিকে আক্রান্ত করে ফেলে তাহলে অবশ্যই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে অথবা কম আক্রান্ত দেখা দিলেও দ্রুত এর ট্রিটমেন্ট নিতে হবে তা না হলে কিন্তু এর মাত্র আস্তে আস্তে বাড়তে থাকবে এবং গামপুরা রোগের প্রভাব এতটাই মারাত্মক হতে পারে যে আপনার পুরা খামারকে নষ্ট করে দিতে পারে।


    কিস্তিতে ওয়ালটন ফ্রিজের দাম | কিস্তিতে ওয়ালটন ফ্রিজ কেনার নিয়ম

    একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

    Post a Comment (0)

    নবীনতর পূর্বতন