মসজিদে বিয়ে করতে কি কি লাগে: ফজিলত ও নিয়মাবলী

মসজিদে বিয়ে করতে কি কি লাগে


বিয়ে একটি পবিত্র বন্ধন যা মুসলিম সমাজে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে পালিত হয়ে থাকে তাই আজকে জানাবো মসজিদে বিয়ে করতে কি কি লাগে এ বিষয়ে। সেই নবী রাসুলের সময় থেকে এখন পর্যন্ত মসজিদে বিয়ে সম্পন্ন করা হচ্ছে। বর্তমান সময়ে অনেকেই মসজিদে বিয়ে সম্পূর্ণ করার আগ্রহ করছেন। যা বর্তমান সময়ে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ


মসজিদে বিয়ে করতে হলে কিছু নিয়ম জানা অত্যন্ত জরুরি। ওর সাথে বিয়ে করতে কি কি লাগে এবং মসজিদে বিবাহ করার ফজিলত কি এই কন্টেন্টের মধ্যে আজকে আমরা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি


মসজিদে বিয়ে করতে কি কি লাগে

মসজিদে বিয়ে সম্পূর্ণ করতে হলে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো প্রয়োজন:

১. বয়সসীমা: ছেলের ন্যূনতম বয়স ২১ বছর এবং কোণের বয়স ১৮ বছর হতে হবে

২. দুই পক্ষের সম্মতি: বর এবং কনের পূর্ণ সম্মতি থাকতে হবে

৩. ওয়ালী বা অভিভাবক: উভয় পক্ষের অভিভাবক থাকতে হবে

৪. সাক্ষী: মসজিদে বিয়ের জন্য কমপক্ষে ২ জন মুসলিম পুরুষ সাক্ষী থাকতে হবে

৫. দেনমোহর: বিয়ের পূর্বে দেনমোহর নির্ধারণ এবং মহারানা প্রদান করতে হবে

৬. বিয়ে রেজিস্ট্রেশন: মসজিদে বিয়ের পর নির্ধারিত কাজীর মাধ্যমে নিবন্ধন করতে হবে


মসজিদে বিয়ে করার পরে পরবর্তীতে কাজী অফিসের মাধ্যমে অথবা কোটের মাধ্যমে বিবাহ রেজিস্ট্রিটি সম্পন্ন করতে হবে। ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী মসজিদে বিয়ে করার জন্য নির্ধারিত কোন বয়স সীমা নাই। পূর্ণ প্রাপ্তবয়স্ক হলেই মসজিদে বিয়ে করা যাবে


আরো দেখুন: বিয়ের রেজিস্ট্রেশন করতে কত টাকা লাগে


মসজিদে বিয়ে করার ফজিলত

মসজিদে বিবাহ করা মুস্তাহাব। হাদিসে উল্লেখ আছে যে রাসুল সাঃ বলেছেন বিবাহের ঘোষণা দিবে এবং তা মসজিদে সম্পন্ন করবে। মসজিদে বিবাহ করার জন্য অনেক ফজিলত রয়েছে, মসজিদ একটি পবিত্র স্থান যেখানে বিবাহ সম্পন্ন করলে আল্লাহর রহমত এবং বরকত পাওয়া যায়



মসজিদে বিবাহ করলে অতিরিক্ত খরচ এবং জাঁকজমক কম হয় যেটা ইসলামে সহজ এবং নির্দেশনার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। মসজিদে বিয়ের মাধ্যমে সমাজের সাদামাটা বিয়ের প্রচলন বাড়ে এবং এবং বর্তমান সময়ে অন্যদের জন্য উদাহরণ হয়ে থাকে


মসজিদে বিয়ে করতে কি কি কাগজ লাগে

মসজিদে বিবাহ করার জন্য প্রয়োজনীয় কিছু কাগজপত্র লাগে। নিচে তা তুলে ধরা হলো:

  • ভোটার আইডি কার্ডের কপি
  • জন্ম নিবন্ধনের কপি
  • পাসপোর্ট সাইজের ছবি(বর ও কনের)
  • অভিভাবকের পরিচয় পত্রের কপি
  • সাক্ষীদের পরিচয় পত্রের কপি
  • দেনমোহর নির্ধারণের কাগজপত্র
  • বিয়ে রেজিস্ট্রেশন ফি


ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী মসজিদে বিবাহ করার জন্য তেমন কোন কাগজপত্র প্রয়োজন পড়ে না। অভিভাবকের সম্মতি এবং মুসলিম তিনজন সাক্ষী থাকলেই মসজিদে বিয়ে করা যায়। তবে, বাংলাদেশ আইন অনুযায়ী মসজিদে বিয়ে সম্পন্ন করার পরে রেজিস্ট্রেশন করার জন্য এই কাগজগুলো লাগে


আরো দেখুন: সরকারিভাবে বিয়ের রেজিস্ট্রেশন ফি কত


মসজিদে বিয়ে করার নিয়ম:

মসজিদে বিয়ে সম্পন্ন করার জন্য প্রয়োজনীয় কিছু নিয়মাবলী অনুসরণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পবিত্রতা বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরী, জোরে শব্দ করা, অতিরিক্ত খাবার আনা, জাঁকজমকভাবে অনুষ্ঠান না করা, এমন কিছু করা যাবে না যাতে মসজিদের মর্যাদা ক্ষুন্ন হয়


মসজিদে বিয়ের আয়োজন সাদামাটা হওয়া উচিত অতিরিক্ত জাঁকজমকপূর্ণ এবং গ্যাঞ্জাম করা যাবে নামসজিদ একটি পবিত্র স্থান তাই পবিত্রতা রক্ষা করতে হবে। বিয়ের সকল প্রক্রিয়া ইসলামী শরীয়া অনুযায়ী সম্পন্ন করতে হবে। বিয়ের পরে কাজী দ্বারা রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করুন


কাবিন ছাড়া বিয়ে কি জায়েজ

কাবিন ছাড়া মুসলিম বিয়ে নাজায়েজসুরা নিসা, ২৫ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, “আর তোমরা তোমাদের স্ত্রীদের তাদের মোহরানা দিয়ে দাও খুশী মনে”। ইসলাম ধর্মে বিয়েতে স্ত্রীর মোহর পরিশোধ করা স্বামীর জন্য ফরজ


ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী বিয়েতে দেনমোহর দেওয়া ফরজ, আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন কুরআনে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেনসুরা নিসা, ২৪ নম্বর আয়াত:তোমরা তোমাদের স্ত্রীদের থেকে যে স্বাদ গ্রহণ করো তার বিনিময়ে অপরিহার্য ফরজ হিসেবে তাদের মোহর পরিশোধ করো”।


কাবিন ছাড়া বিয়ে কখনোই জায়েজ হবে না। তাই প্রত্যেকটি পুরুষকেই স্ত্রীকে কাবিন দিয়ে বিবাহ সম্পন্ন করতে হবে


উপসংহার:

মসজিদে বিয়ে করলে আল্লাহর ফজিলত এবং রহমত পাওয়া যায়। এটি পবিত্রতা এবং সাদামাটা আয়োজন এবং সামাজিক বার্তার দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে মসজিদে বিয়ে করতে হলে অবশ্যই মসজিদের পবিত্রতা রক্ষা করতে হবে। এবং উপরের নিয়ম অনুযায়ী মসজিদে বিয়ে করুন এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি রহমত অর্জন করুন



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Post a Comment (0)

নবীনতর পূর্বতন