আপনি হয়তোবা জানেন না আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র ব্যবহার করে অনেকেই সিম রেজিস্ট্রেশন করে ব্যবহার করছে। সঠিকভাবে সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল না করলে আপনার নামে থাকা সিম গুলো অপরাধ মূলক কার্যক্রমে ব্যবহার হতে পারে।
তাই আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র ব্যবহার করে কেউ যদি সিম ব্যবহার করে থাকে তাহলে আপনার জন্য এটি খুবই বিপদজনক হতে পারে। সঠিকভাবে সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার নিয়ম জানা অত্যন্ত জরুরি। তাহলে চলুন এই বিষয়টি আমরা জেনে নেই।
সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার নিয়ম
যে কোন সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার জন্য কিছু প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়। পর্যায়ক্রমে আমরা এখানে ধাপে ধাপে সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার নিয়ম গুলো নিচে তুলে ধরলাম:
১. কয়টা সিম রেজিস্ট্রেশন যাচাই করুন
আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের মাধ্যমে কয়টা সিম রেজিস্ট্রেশন করা আছে তা যাচাই করে দেখুন। সিম রেজিস্ট্রেশন যাচাই করার জন্য আপনার মোবাইল থেকে *16001# এই নাম্বারে ডায়াল করুন এর পরে আপনার ভোটার আইডি কার্ডের শেষের ৪ টি সংখ্যা প্রদান করুন। পরবর্তী বার্তায় ভোটার আইডি কার্ডে কয়টি সিম রেজিস্ট্রেশন আছে দেখতে পাবেন।
২. অতিরিক্ত সিম চিহ্নিত করুন
সরকারের নিয়ম অনুযায়ী একজন ব্যক্তির সর্বোচ্চ ১৫ টি পর্যন্ত সিম ব্যবহার করতে পারবে। একটা ভোটার আইডি কার্ডের মাধ্যমে ১৫ টির বেশি সিম রেজিস্ট্রেশন আছে কিনা সেটা যাচাই করে দেখুন।
৩. সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিলের জন্য আবেদন
যে কোন অপারেটরের সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার পদ্ধতি নিচে বর্ণনা করা হলো:
জিপি সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার নিয়ম
জাতীয় পরিচয় পত্র এবং জিপি সিম কার্ড নিয়ে আপনার নিকটস্থ গ্রামীণফোন কাস্টমার কেয়ার সেন্টারে যান। কাস্টমার কেয়ারের প্রতিনিধির কাছে আপনার পরিচয় পত্র এবং সিম কার্ড রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার অনুরোধ করুন। আপনার পরিচয় পত্র যাচাই করে সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করে দিবে।
আরো পড়ুন: রবি ইন্টারনেট অফার ১৭ টাকায় ২ GB, ৩, ৭ ও ৩০ দিনের
রবি সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার নিয়ম
রবি সিম কার্ড এবং জাতীয় পরিচয় পত্র নিয়ে আপনার নিকটস্থ রবি কাস্টমার সেন্টারে যান। রবি সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার জন্য কাস্টমার কাস্টমার কেয়ার প্রতিনিধির কাছে বলুন। প্রতিনিধি আপনার সকল বিষয় যাচাই করে রবি সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করে দিবে।
বাংলালিংক সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার নিয়ম
বাংলালিংক সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার জন্য জাতীয় পরিচয় পত্র এবং বাংলালিংক সিম কার্ড সহ বাংলালিংক কাস্টমার কেয়ারে যান। কাস্টমার কেয়ারে প্রতিনিধির কাছে সিম বাতিলের আবেদন করুন। এরপরে তারা সকল তথ্যগুলো যাচাই সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করে দিবে।
টেলিটক সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার নিয়ম
টেলিটক সিম কার্ড রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার জন্য টেলিটক কাস্টমার কেয়ারে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র এবং টেলিটক সিমটি নিয়ে যান। এর পরে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র এবং অন্যান্য তথ্য যাচাই করে সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করে দিবে।
মোবাইল নাম্বার দিয়ে লোকেশন বের করার এপস
৪. অনলাইনে সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল
বেশ কিছু অপারেটর অনলাইনে সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিলের সুবিধা রেখেছে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট অপারেটরের ওয়েবসাইট বা মোবাইল অ্যাপস এর মাধ্যমে সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিলের আবেদন করতে পারবেন।
তবে এক্ষেত্রে অনলাইনে সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল এর আগে আপনার পরিচয় পত্র এবং অন্যান্য বিষয়গুলো সঠিকভাবে যাচাই হয়েছে কিনা নিশ্চিত করুন।
৫. সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিলের পর করণীয়
সিম কার্ড রেজিস্ট্রেশন বাতিলের পর চেক করে দেখুন যে আপনার সিম আর কার্যকর নেই। এছাড়াও পরবর্তী যদি আপনি কোন সময় এই সিমটি পুনরায় চালু করতে চান তাহলে ওই অপারেটরের নীতিমালা অনুযায়ী আবারো পুনরায় রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন।
তবে ক্ষেত্রে যতদিন পর্যন্ত সেই সিমটি অন্য কেউ ক্রয় না করবে ততদিন পর্যন্ত আপনি এই সুযোগটি পাবেন।
সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করতে কত টাকা লাগে
সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করতে টাকা বা ফি লাগেনা। তবে, কিছু কোম্পানি আছে এক্ষেত্রে সামান্য পরিমাণ ফি ধার্য করে থাকতে পারে। এক্ষেত্রে আপনার সিমের অপারেটর অনুযায়ী কাস্টমার কেয়ারে যোগাযোগ করে বিস্তারিত জেনে নিতে পারেন।
সিম বন্ধ করার কোড
যে কোন অপারেটরের সিম বন্ধ করার কোন কোড নেই। সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল বা সিম বন্ধ করার জন্য ওই সিম কোম্পানির কাস্টমার কেয়ারে যেতে হবে। এক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয় পত্র এবং আপনি যেই সিমটি বন্ধ করতে চাচ্ছেন সেই সিমটি সাথে নিয়ে যেতে হবে। তারপরে আবেদন করলেই আপনার সিমটি তারা বন্ধ করে দিবে।
সিম বন্ধ করার জন্য কি কি প্রয়োজন:
সিম কার্ড বন্ধ করার জন্য কি কি লাগে নিচে তুলে ধরা হলো:
- যে সিম কার্ড বন্ধ করবেন সেই সিম কার্ড লাগবে।
- রেজিস্ট্রেশন করা সিমের নাম্বার।
- সিম রেজিস্ট্রেশন করা জাতীয় পরিচয় পত্র।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: এক্ষেত্রে আপনার সিমটি যদি হারিয়ে যাই অথবা আপনার কাছে সিমটি না থাকে তাহলে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র নিয়ে ওই অপারেটরের কাস্টমার কেয়ারে গিয়ে সিমটি বন্ধ করার অনুরোধ করুন। পরবর্তী তারা যাচাই করে সিমটি বন্ধ করে দিবে।
আরো পড়ুন: ফেসবুক পেজ থেকে টাকা ইনকাম করার 10 টি উপায়
উপসংহার:
যে কোন অপারেটরের সিম কার্ড রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রক্রিয়া। মূলত সিম কার্ড রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা নিরাপত্তা বা আইনি সুরক্ষার জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। উপরের ধাপগুলো অনুসরণ করে খুব সহজে আপনারা সিম কার্ড রেজিস্ট্রেশন বাতিল করতে পারবেন।
সিম কার্ড রেজিস্ট্রেশন বাতিল সম্পন্ন করে অনাকাঙ্ক্ষিত ঝামেলা থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারবেন। একটা সিমটি যদি হারিয়ে যাই অথবা সিমের মাধ্যমে যদি অন্য কেউ বিভিন্ন ধরনের স্ক্যাম করে থাকে তাহলে অবশ্যই দ্রুত কাস্টমার কেয়ারে গিয়ে সিমটি বন্ধ করে ফেলুন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন