হার্টের ছিদ্রের চিকিৎসা খরচ ও ফ্রি চিকিৎসার উপায়

হার্টের ছিদ্রের চিকিৎসা খরচ

আপনার কি জানা আছে যে, হার্টের ছিদ্র শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য কতটা বিপজ্জনক হতে পারে? হার্টের ছিদ্রের লক্ষণ অনেক সময় দীর্ঘদিন বোঝা যায় না, কিন্তু এটি ধীরে ধীরে শরীরের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। বাংলাদেশে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোর চিকিৎসা খরচ, বিনা অপারেশনে সমাধানের উপায়, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনে সাশ্রয়ী মূল্যে চিকিৎসার সুযোগ – সবকিছু বিস্তারিত জেনে নিন একসঙ্গে! হার্টের সুস্থতা নিশ্চিত করতে দ্রুত সঠিক সিদ্ধান্ত নিন।

বড়দের হার্টের ছিদ্রের চিকিৎসা

বড়দের মধ্যে হার্টের ছিদ্র চিকিৎসা নির্ভর করে ছিদ্রের আকার ও অবস্থানের উপর। ছোট ছিদ্র হলে অনেক সময় ওষুধের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তবে বড় ছিদ্র হলে ক্যাথেটার বা অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে এটি বন্ধ করতে হয়। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা খরচ প্রায় ৭০,০০০ – ২,০০,০০০ টাকা, আর বেসরকারি হাসপাতালে সার্জারি করলে খরচ পড়তে পারে ২,৫০,০০০ – ৬,০০,০০০ টাকা। ওষুধ ও পরবর্তী ফলোআপ চিকিৎসা বাবদ আরও ২০,০০০ – ৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে।

নবজাতকের হার্টের সমস্যা চিকিৎসা খরচ

নবজাতকের হার্টের ছিদ্র যদি ছোট হয়, তবে কিছু ক্ষেত্রে এটি নিজে থেকেই বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তবে বড় ছিদ্র হলে চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। সরকারি মেডিকেলে বিনামূল্যে বা খুবই কম খরচে চিকিৎসা পাওয়া যায়, যা ৫০,০০০ – ১,৫০,০০০ টাকার মধ্যে হতে পারে। বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে এই চিকিৎসার জন্য ২,০০,০০০ – ৫,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে। অস্ত্রোপচারের পর ওষুধ, আইসিইউ খরচ এবং পুনর্বাসন বাবদ ৫০,০০০ – ১,০০,০০০ টাকা অতিরিক্ত খরচ হতে পারে।

বিনা অপারেশনে হার্টের ছিদ্রের চিকিত্সা

ক্যাথেটার-ভিত্তিক চিকিৎসা হলো বিনা অস্ত্রোপচারে হার্টের ছিদ্র বন্ধ করার আধুনিক পদ্ধতি। এতে ছোট ক্যাথেটারের মাধ্যমে ছিদ্র বন্ধ করা হয়, যা তুলনামূলকভাবে নিরাপদ ও ব্যথাহীন। সরকারি হাসপাতালে এর খরচ ৮০,০০০ – ২,০০,০০০ টাকা, এবং বেসরকারি হাসপাতালে খরচ পড়তে পারে ২,৫০,০০০ – ৫,০০,০০০ টাকা। অন্যান্য ওষুধ ও ফলোআপ মিলিয়ে মোট খরচ প্রায় ৫০,০০০ – ১,০০,০০০ টাকা হতে পারে।

আরো পড়ুন: ফর্সা হওয়ার জন্য ডাক্তারি নাইট ক্রিম

বাচ্চাদের হার্টের ছিদ্র চিকিৎসা

বাচ্চাদের হার্টের ছিদ্রের চিকিৎসা নির্ভর করে ছিদ্রের আকার ও অবস্থানের উপর। ছোট ছিদ্র অনেক সময় বয়স বাড়ার সাথে বন্ধ হয়ে যায়, তবে বড় হলে চিকিৎসার প্রয়োজন পড়ে। সরকারি হাসপাতালে খরচ পড়তে পারে ৬০,০০০ – ১,৮০,০০০ টাকা, আর বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ২,৫০,০০০ – ৬,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে।

হোমিওপ্যাথিতে হার্টের ছিদ্র চিকিৎসা

হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার মাধ্যমে সরাসরি হার্টের ছিদ্র বন্ধ করা সম্ভব নয়। তবে কিছু ওষুধ হৃদপিণ্ডের কার্যকারিতা উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে। তবে, বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত কোনো উপায় নেই যে হোমিওপ্যাথি হার্টের ছিদ্র নিরাময়ে কার্যকর।

ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন খরচ

ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের অন্যতম সাশ্রয়ী হৃদরোগ চিকিৎসা কেন্দ্র। এখানে ক্যাথেটার-ভিত্তিক চিকিৎসার খরচ ৭০,০০০ – ১,৫০,০০০ টাকা, আর সার্জারির খরচ ১,৫০,০০০ – ৪,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। ওষুধ ও অন্যান্য ফলোআপ চিকিৎসা মিলিয়ে ২০,০০০ – ৬০,০০০ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে।

কত মিলিমিটার ছিদ্র হলে অপারেশন করতে হয়?

সাধারণত ৬ মিলিমিটারের বেশি ছিদ্র হলে চিকিৎসকেরা অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দেন। তবে, ৪-৫ মিলিমিটারের ছিদ্রও যদি লক্ষণ সৃষ্টি করে, তাহলে চিকিৎসা প্রয়োজন হতে পারে।

হার্টের ছিদ্র লক্ষণ

হার্টের ছিদ্রের কারণে রক্ত সঞ্চালনে সমস্যা হয়, যা শরীরের বিভিন্ন অংশে অক্সিজেন সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। সাধারণ লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে:

  • শ্বাসকষ্ট ও দুর্বলতা
  • সহজেই ক্লান্ত হয়ে পড়া
  • হৃদস্পন্দনের অনিয়ম
  • বুকে ব্যথা বা চাপ অনুভব করা

বড়দের হার্টের ছিদ্রের লক্ষণ

প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে হার্টের ছিদ্রের লক্ষণ ধীরে ধীরে প্রকাশ পেতে পারে এবং কখনো কখনো এটি দীর্ঘদিন অবহেলিত থাকে। লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে:

  • শারীরিক পরিশ্রমে দ্রুত ক্লান্ত হয়ে পড়া
  • বুকে ব্যথা বা শ্বাসকষ্ট
  • পা, গোড়ালি বা হাত ফুলে যাওয়া
  • অনিয়মিত হৃদস্পন্দন

    উপসংহার

    হার্টের ছিদ্রের চিকিৎসা দ্রুত গ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে উন্নত মানের চিকিৎসা পাওয়া যায়। নির্দিষ্ট লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

    আরো পড়ুন: এমআরআই করতে কত টাকা লাগে দেখুন

    Leave a Comment